২০১৮ সালে পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালে এক দৃষ্টিশক্তিহীন ভিক্ষুক মুসলিম দম্পতিকে অসামাজিকভাবে হেনস্থা করার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর ভাবে জিইয়ে উঠেছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে ঘটনার স্থান ও সময় উল্লেখ না করায় নেটিজেনরা সাম্প্রতিক ঘটনা বলে ভুল করছেন। ভিডিওতে এই বৃদ্ধ দম্পতির হাতে একটি গেরুয়া পতাকা ধরিয়ে জোর করে তাদের দিয়ে বিশেষ রাজনৈতিক স্লোগান দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে এই ভিডিওটি ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের।
১ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা দেখা যায়, এক বৃদ্ধ
দৃষ্টিশক্তিহীন মুসলিম দম্পতিকে কিছু লোক মিলে ঘিরে ধরেছে। ভিডিও জুড়ে ক্যামেরার পেছন থেকে কেউ বার বার এই দম্পতিকে বিশেষ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোধান দিতে বাধ্য করে।
বৃদ্ধ এই দম্পতি প্রথমে স্লোগান দিতে অনিহা প্রকাশ করায় ওই দুস্কৃতকারীরা তাদের চাপ দিতে থাকে। বৃদ্ধ লোকটি হাতে গেরুয়া পতাকা ধরে তাদেরকে অনুনয়ের সুরে বোঝাতে চেষ্টা করে। কিন্তু দুস্কৃতকারীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তখন এই দম্পতি ওই স্লোগানগুলি দিতে বাধ্য হন।
ভিডিওটিকে ফেসবুকে শেয়ার করে উপহাসমূলক ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "এই দেখুন মুসলিম মৌলবাদীরা জোর করে আল্লাহ আকবর চাপ দিয়ে বলিয়ে নিচ্ছে।"
ফেসবুক ব্যবহারকারীর একই ভিডিওটি বিভিন্ন ক্যাপশন সহ নতুন করে শেয়ার করেছেন। এরকম দুটি ফেসবুক পোস্ট আর্কাইভ করা আছে
এখানে ও
এখানে। ভিডিওটির দৃশ্য স্পর্শকাতর হওয়ায় বুম ভিডিওটিকে প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুম যাচাই করে দেখে ওই দৃষ্টিশক্তিহীন বৃদ্ধ মুসলমান দম্পতিকে হেনস্থা করার ঘটনাটি সাম্প্রতিক নয়।
বুম গুগলে "বৃদ্ধ দম্পতি" "জোর করে স্লোগান বলানো" এই কিওয়ার্ড দিয়ে অনুসন্ধান করে ওই ঘটনা নিয়ে ২০১৮ সালের বেশ কিছু প্রতিবেদেন খুঁজে পায়।
২ এপ্রিল ২০১৮ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয় দৃষ্টিশক্তিহীন এক মুসলিম দম্পতি ৬৭ বয়সী আবুল বাশার ও ৬১ বছর বয়সী বেদানা বিবিকে হেনস্থা করা হয় পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালের চিতডাঙ্গা এলাকায়। এক দল অসামজিক লোকজনা জোর করে তাঁদের বিশেষ স্লোগান দিতে বাধ্য করে। বীরভূম জেলার তারাপীঠে বুধিগ্রামের বাসিন্দা ওই অন্ধ দম্পতিকে মার্চ মাসে হেনস্থা করার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।টাইমস নাউকে অন্ডাল পুলিশের ইন-চার্জ সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন ঘটনা
নিয়ে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
বেদানা বিবি সংবাদ মাধ্যমেকে জানান ভীত হওয়ার কারণে তাঁরা কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।