Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

সম্পর্কহীন ভিডিও ছড়িয়ে দাবি মুসলিমদের উপর ফরাসি পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ

বুম যাচাই করে দেখে পুরনো চারটি ভিডিও বিভিন্ন জায়গায় তোলা।

By - Nivedita Niranjankumar | 1 Nov 2020 6:59 AM GMT

এক ফরাসি স্কুল শিক্ষকের শিরচ্ছেদ করে এক ইসলামি চরমপন্থী। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিক মিথ্যে খবর ছড়ানো হচ্ছে। সেই রকমই একটি সাম্প্রতিক ভুয়ো খবরে, বিভিন্ন দেশের সম্পর্কহীন ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। সেগুলিকে একত্রিত করে দাবি করা হচ্ছে যে, ফ্রান্সের সরকার সে দেশে বসবাসকারী মুসলমান ও মসজিদগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।

বুম দেখে, জার্মানি, ইতালি ও ফ্রান্সে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার পুরনো ভিডিও সেগুলি।

১৬ অক্টোবর, স্যামুয়েল প্যাটি নামের এক ফরাসি স্কুল শিক্ষক খুন হন। উনি ইতিহাস ও ভূগোল পড়াতেন। বলা হচ্ছে, আঠেরো বছর বয়সী, চেচেন বংশোদ্ভূত, ফ্রান্সে বসবাসকারী রুশ রিফিউজি আদোল্লাখ আবোয়েজিদোনোভিচ প্যাটির মাথা কেটে দেয়। ক্লাসে পড়ানর সময়, নবী মহম্মদের ওপর একটি বিতর্কিত ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্যাটির শিরশ্ছেদ করা হয়। বলা হচ্ছে, সন্দেহভাজন আবোয়েজিদোনোভিচ-কে পুলিশ ইভরু-তে গুলি করে মারে। ওই এলাকাতেই প্যাটির দেহ পাওয়া গিয়েছিল।

ইংরেজি ও আরবিতে লেখা ক্যাপশন সহ ভিডিওগুলি ফেসবুক, টুইটার ও হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হয়েছে। ক্যাপশনে বলা হয়েছে, মুসলমানদের আক্রমণ করতে কর্তৃপক্ষ মসজিদে অভিযান চালাচ্ছে। ভিডিওগুলি শেয়ার করার সময় বলা হচ্ছে, "ফ্রান্স মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। প্যারিসে ক্লিশি ও আনহালুর মহান মসজিগুলিতে অভিযান চালানো হয়েছে। মুসলমানদের মারধোর করা হচ্ছে। ফরাসি কর্তৃপক্ষ বিপদ সীমা অতিক্রম করে ফেলেছেন। আগামী দিনগুলি ভাল হবে না। ফ্রান্স মুসলমান ও ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। প্যারিসে ক্লিশি ও আনহালুর মসজিদে অভিযান চালানো হয়েছে।"

চারটি ভিডিওর একই ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে।

Full View


Full View


আরও পড়ুন: প্যারিস শিরচ্ছেদ: ইয়েমেনের পুরনো ভিডিও মিথ্যে দাবি সহ ভাইরাল

তথ্য যাচাই

বুম দেখে, শেয়ার-করা ভিডিওগুলির সঙ্গে ফ্রান্সে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। একটি ভিডিও জার্মানিতে এক বিক্ষোভের সময় তোলা হয়। দু'টি হল ইতালিতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বাধানিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভিডিও। আর বাকি একটি হল ফ্রান্সে একটি পুরনো ঘটনার ছবি।

প্রথম দ্বিতীয় ভিডিও


আমরা দেখি, দু'টি ভিডিও ইতালির। দু'টিই নেপেল্স-এর একটি ঘটনার ওপর তোলা হয়। দু'টি ভিডিওই আমরা বিশ্লেষণ করি। তার মধ্যে, একটির ভাষা ইতালীয় বলে চিহ্নিত করা যায়। ওই তথ্যটির সূত্র ধরে, আমরা ইতালিতে সাম্প্রতিক হিংসাত্মক বিক্ষোভ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের সন্ধান করি। তার ফলে, সে দেশের নেপেল্স-এ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক প্রতিবাদের ছবি দেখতে পাই আমরা।

২৫ অক্টোবরের একটি টুইটও আমাদের নজরে আসে। তাতে একটি ভিডিও ছিল। সেটির দৃশ্য ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে মিলে যায়।

'হুলিগ্যানস টিভি'-র তোলা ভিডিও এবং ভাইরাল ভিডিওটিতে একই লোকজন ও দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। আমরা আরও দেখি যে, এক স্থানীয় সাংবাদিক ২৪ অক্টোবর একটি ভিডিও টুইট করেন। সেই দিনই নেপেল্স-এ ওই হিংসাত্মক ঘটনায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সাংবাদিক পিয়েরপাওলো ভিডিওটি টুইট করেন। ক্যাপশনে উনি বলেন, ঘটনাটি নেপেল্স-এ ঘটে। পুলিশকে আক্রমণ করার জন্য বিক্ষোভকারীদের নিন্দাও করেন তিনি।

সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইতালিতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকানোর উদ্দেশ্যে নতুন জারি করা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সে দেশের নানান শহরে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়। বিবিসির খবরে বলা হয়, নেপেল্স শহরের কেন্দ্রস্থল পিয়াজা দেল প্লেবিসিতো-য় এক বিরাট জনসমাগমে সেখানকার আঞ্চলিক গভর্নরের ইস্তফার দাবি ওঠে।

তৃতীয় ভিডিও

তৃতীয় ভিডিওটি ২০ জানুয়ারি, ২০২০ তে তোলা। তাতে একটি ব্যস্ত রাস্তায় জড়ো-হওয়া লোকজনকে 'আল্লাহ-হু-আকবর' ধ্বনি দিতে শোনা যাচ্ছে। চিনে উইঘুর মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করছিল ওই জনতা।


ভিডিওটিতে একটি ভ্যানকে বারবারই দেখা যায়। আমরা লক্ষ করি, সেটির গায়ে 'পোলিজেই' শব্দটি লেখা। জার্মান ভাষায় সেটির মানে, পুলিশ। সেটিকে সূত্র ধরে আমরা জার্মান ভাষায় 'মুসলিম প্রোটেস্ট' (মুসলমানদের প্রতিবাদ) লিখে সার্চ করি। তার ফলে, ওই ভাইরাল ভিডিওটি বেরিয়ে আসে। দেখা যায়, সেটি জানুয়রি ২০২০ থেকে অনলাইনে আছে। জানুয়ারির কিছু ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায় যে, জার্মানির হামবুর্গ শহরে ওই প্রতিবাদ আয়োজিত হয়। তাতে ২০০০ মানুষ অংশ নেন। চিনে উইঘুর মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করছিলেন তাঁরা।

জার্মান সংবাদ পরিবেশক 'নর্ডডয়শা রান্ডফাঙ্ক'-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হামবুর্গ-সেন্ট জর্জ-এর স্টেইনডাম-এ চিনের বিরুদ্ধে ওই বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। এরপর আমরা ইউটিউবেও সার্চ করি। দেখা যায়, ওই একই ভিডিও সেখানে ১৫ জানুয়ারি ২০২০ তে আপলোড করা হয়। সেটির জার্মান ভাষায় লেখা ক্যাপশনের মানে দাঁড়ায়, "হামবুর্গে উইঘুর বিক্ষোভ"।

Full View

ডকিউমেন্টিং অপ্রেশন এগেইনস্ট মুসলিমস (ডিওএএম) নামের সংস্থাটির টুইটও আমাদের নজরে আসে। ওই সংস্থা মুসলমানদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা নথিভুক্ত করে রাখে। টুইটটিতে ওই বিক্ষোভের নানা দিক থেকে তোলা দৃশ্য ছিল। ১২ জানুয়ারির ওই টুইটে, ভিডিওটির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলা হয়, "উইঘুর মুসলমানদের প্রতি সংহতি জানাতে গতকাল জার্মানির হামবুর্গ শহরে কয়েক হাজার মানুষ সমবেত হন।"

চতুর্থ ভিডিও


আমরা দেখি, এই ভিডিওটি ফ্রান্সের হলেও, সেটি পুরনো এবং সে দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।

Full View

ভিডিওটির একটি ফ্রেম দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে, প্যারিসের শহরতলি ক্লিশির একটি মসজিদের উল্লেখ নজরে আসে। সার্চের ফলাফলের মধ্যে, ২৩ মার্চ, ২০১৭-র একটি ইউটিউব ভিডিও-ও ছিল। সেটির শিরোনামে বলা হয়, 'হৃদয়স্পর্শী! ক্লিশির একটি মসজিদ থেকে গায়ের জোরে উৎখাত"।

Full View

একটি স্থানীয় খবরের ওয়েবসাইট ভিডিওটি আপলোড করেছিল। ভাইরাল ভিডিওটির থেকে সেটি একটু বড়। কিন্তু একই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় তাতেও। এবং জায়গাটিও যে এক তাও স্পষ্ট বোঝা যায়। এরপর আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে সংবাদ প্রতিবেদনের খোঁজ করলে, বেশ কিছু রিপোর্ট সামনে আসে। তাতে বলা হয়, দেসটিয়েন-দরভ এলাকায় একটি মসজিদের লিজ মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ তা নবীকরণ করেননি। তাই পুলিশ সেখানে প্রবেশ করে।

রিপোর্টগুলিতে আরও বলা হয় যে, স্থানীয় বাসিন্দারা মসজিদটি ব্যবহার করতেন। তাঁরা সেখানে প্রতিবাদ জানাতে গেলে পুলিশ তাঁদের সেখান থেকে উৎখাত করে। সেই দৃশ্যই ভিডিওতে ধরে রাখা হয়। আরও পড়ুন এখানে এখানে

ফ্রান্সে শিক্ষকের শিরচ্ছেদের ঘটনার পর থেকে পুরনো ভিডিওি এবং ছবি ব্যবহার করে মিথ্যে খবর ছড়ানো হচ্ছে। শিক্ষকের ওপর আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে দু'টি ভুয়ো খবর বুম ইতিমধ্যেই খণ্ডন করছে।

আরও পড়ুন: বিভ্রান্তিকর দাবি সহ ছড়াল জাকারবার্গ ও রাষ্ট্রপতি মাকরঁর বৈঠকের ছবি

Related Stories