গুজরাটের এক আরএসএস কর্মীর কাছ থেকে জাল নোট উদ্ধার হওয়ার যে পোস্টটি সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে, সেটি দুটি আলাদা ঘটনার ছবি মিলিয়ে বানানো হয়েছে এবং অভিযুক্ত সংগঠনটির সঙ্গে ঘটনার কোনও সংশ্রব নেই।
তিনটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, যার একটিতে পুলিশ একটি সাংবাদিক বৈঠক করছে, অন্য দুটিতে ২০০০ টাকার জাল নোটের তোড়া দেখানো হয়েছে।
ছবির সঙ্গে দেওয়া হিন্দি ক্যাপশনের অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, "গুজরাটে জাল নোটের একটি মজুত ভাণ্ডারের হদিশ মিলেছে। গোপনে লুকিয়ে রাখা এই জাল নোটের পাহাড় আটক হয়েছে আরএসএস-এর একনিষ্ঠ কর্মী কেতন দাভের গাড়ি থেকে। কপি করা।"
একই দাবি সহ টুইটারেও ছবিগুলি ভাইরাল হয়েছে।
गुजरात से नकली नोटों का भंडार पकड़ा गया
— 🔥जलता हिंदुस्तान,जलता सविंधान🔥 (@HabibHasan_) January 13, 2020
और ईमानदार संघ समर्थक श्री केतन दवे की कार से मिला ये नकली नोटों का जखीरा...
RBI को बन्द करके Currency छापने और संचालन का काम भी इनको ही दे देना चाहिये | pic.twitter.com/yl2lyytjds
তথ্য যাচাই
বুম ছবিগুলির খোঁজখবর চালিয়ে দেখেছে, এগুলি ২০১৯ সালের ২ নভেম্বর তেলেঙ্গানার খাম্মাম জেলার ভেমসুর মণ্ডলের ঘটনার ছবি। ছবিগুলি তোলা হয় যখন তেলেঙ্গানার পুলিশ জাল নোট তৈরির একটি কারবার ফাঁস করে ৫ জনকে গ্রেফতার করে, যাদের কাছে ২ হাজার টাকার নোটে ৬ কোটিরও বেশি জাল নোট পাওয়া যায়। ছবিতে খাম্মাম দেলার পুলিশ কমিশনার তফসির ইকবালকেও দেখা যাচ্ছে।
তেলেঙ্গানা টুডে এবং ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জাল নোটের কারবারিরা কিছু নজরানার বদলে ২ হাজার টাকার তামাদি হয়ে যাওয়া নোট পাল্টে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে লোকেদের কাছ থেকে পয়সা কামাতো।
ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনের কিছু অংশ নীচে দেওয়া হলো।
"তেলেঙ্গানা পুলিশ ২ হাজার টাকার জাল নোট ছড়ানোর একটি আন্তঃরাজ্য গোষ্ঠীকে ধরেছে। খাম্মাম জেলার ভেমসুর মণ্ডলের ঘটনা এটি। জালিয়াতরা সরলপ্রাণ লোকদের ঠকাতো ২ হাজার টাকার তামাদি নোট ভাঙিয়ে দেওয়ার নাম করে, যে জন্য তারা গ্রাহকদের ২০ শতাংশ কমিশনও দিত। পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে ২ হাজার টাকার জাল নোটের ৩২০টি বাণ্ডিলও বাজেয়াপ্ত করেছে, যেগুলির মোট পরিমাণ ৬ কোটি ৪০ লক্ষ। তদন্ত চলছে।"
২০১৯ সালের ২ নভেম্বর এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালও (এএনআই) ভাইরাল হওয়া ওই ছবিই টুইট করে।
Telangana: Khammam police today arrested five persons for cheating public in guise of exchanging Rs. 2,000 denomination currency notes and offering 20% commission.
— ANI (@ANI) November 2, 2019
320 bundles of Rs. 2000 denomination fake notes (around Rs 6.4 crores) seized. pic.twitter.com/ptulXGi1Qb
কে এই কেতন দাভে
ভুয়ো পোস্টে ২০১৭ সালের মার্চ মাসের একটি ঘটনাও জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যখন পুলিশ প্রতারণার দায়ে কেতন দাভে নামে এক লগ্নিকারীকে গ্রেফতার করে। নীতিন আজানি নামে এক ব্যবসায়ী কেতনের নামে পুলিশের কাছে প্রতারণার অভিযোগ করেন।
২০১৭ সালের ৪ মার্চ হিন্দুস্তান টাইমস প্রতিবেদনে লেখে— "পুলিশ গুজরাটের রাজকোট জেলার দুটি জায়গা থেকে জাল নোটের বৃহৎ কারবারিদের গ্রেফতার করে, যাদের কাছে ২ হাজার টাকার জাল নোটের বাণ্ডিলে মোট ৪ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা মজুত ছিল। প্রায় সারা রাত ধরেই নোট গোনার কাজ চলে। দেখা যায়, ২ হাজারের নোটের ২২ হাজার ৪৭৯টি নকল নোট রয়েছে।"
২০১৭ সালের রাজকোটের জাল নোট চক্রের বিষয়ে আরও খবর জানতে এখানে এবং এখানে ক্লিক করুন। তেলেঙ্গানা কিংবা গুজরাট, দুটি ঘটনার কোনওটির সঙ্গেই আরএসএস-এর যুক্ত থাকার কোনও খবর কোনও প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়নি।