Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ভারত

যেভাবে ছেলেধরার গুজব পালঘরে গণপিটুনির কারণ হয়ে উঠল

বুম দুটি ফরওয়ার্ড-করা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পেয়েছে, যেখানে বলা হয়—ছেলেধরা আর চোরেরা জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে হামলা করেছে।

By - Swasti Chatterjee | 22 April 2020 4:42 PM GMT

মহারাষ্ট্রের পালঘরের গাঢ়চিনচালেতে সম্প্রতি উত্তেজিত জনতার গনপিটুনিতে দুইজন হিন্দু সাধুসহ তিনজনের হত্যার ঠিক পূর্বে গাঢ়চিনচালে সংলগ্ন গ্রামগুলিতে নানান গুজব এবং ভুয়ো খবর লোকজনের মধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছিল। বুম এমনই কিছু ভাইরাল মেসেজ ও পোস্ট সংগ্রহ করেছে। এই সমস্ত মেসেজ ও পোস্টে বলা হয়ছে গাঢ়চিনচালের নিকটবর্তী গ্রামবাসীদেরকে চোর এবং ছেলেধরাদের আগমনের কথা জানানো হয়েছিল এবং তাদেরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়। ফলে গ্রামবাসীরা এইসব খবরের বশবর্তী হয়ে দলবদ্ধ ভাবে রাতে গ্রামে গ্রামে টহল দিতে শুরু করে।

১৬ এপ্রিল রাতে, ৩০০ গ্রামবাসীর এক উন্মত্ত জনতা একত্রিত হয়ে তিন ব্যক্তিকে আক্রমণ করে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন দুজন সন্ন্যাসী সুশীল গিরি মহারাজ (৩৫) ও চিকনে মহারাজ কল্পবৃক্ষগিরি (৭০) এবং তাঁদের গাড়িচালক নীলেশ তেলগনে (৩৫)। তারা সুরাটে একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। গাঢ়চিনচালের গ্রামবাসীরা এই তিন জন ব্যাক্তিকে আটক করে এবং পিটিয়ে তাদের হত্যা করে। ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ১১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে ন'জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। বুম দেখে, ১৬ এপ্রিলের আগে কিছুদিন থেকেই ভুয়ো বার্তাগুলি ছড়ানোর ফলে গাঢ়চিনচালে সহ আরও অনেক গ্রামে স্থানীয় সুরক্ষা দল তৈরি হয় এবং তারা রাতে নিজেদের এলাকায় টহল দেওয়া শুরু করে সম্ভাব্য চোর বা ছেলেধরাদের ধরার জন্য। সেই রকমই একটি দল ওই তিন জনকে চোর বা ছেলেধরা ভেবে আক্রমণ করে।

গ্রামে ছড়াতে থাকা গুজব গুলির মধ্যে কিছু কিছু তীব্র সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ মূলক ছিল, যদিও বেশীর ভাগ গুঁজবই ছিলো ছেলেধরা সম্পর্কিত। পালঘরের এক স্থানীয় সাংবাদিক সেই রকমই একটি মেসেজ বুমকে পাঠান। তাতে দাবি করা হয় যে, ১২ এপ্রিল রাতে রানশেট, ওয়াধনা, নিকানে, গনজাড ও সরনি গ্রামে ছেলেধরাদের দেখা যায়। মারাঠিতে লেখা ওই বার্তায় বলা হয়, ছেলেধরাদের গঠন "মুসলমানদের মত, তারা বেশ শক্তসমর্থ এবং রাতে হানা দেয়।"

ফরওয়ার্ড-করা হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাটিতে যা বলা হয়, তা এই রকম: "বন্ধুগণ, সতর্ক থাকুন। ১২ এপ্রিল রাতে, রানশেট, ওয়াধনা, নিকানে, গনজাড ও সারনিতে চোরেরা এসেছিল। তারা মুসলমানদের মত দেখতে, লম্বা আর শক্তসমর্থ। ওরা রাতে বাড়ির জানলা দিয়ে ঢোকে এবং বাচ্চা ও অল্পবয়সী ছেলে- মেয়েদের ধরে নিয়ে যায়। এই বার্তা যত পারেন শেয়ার করুন।"

(মারাঠিতে লেখা বার্তা: मित्रांनो सावधान दिनांक 12/04/2020; रात्री रानशेत,वधना, निकने,गंजाड,सारणी ला चोर आले होते . दिशायला मुशलिम सारखे दिसतात तसेच हाइटेड आणि तबेतिला जास्त आहेत रात्री घराच्या खिड़कितुन डोकावतात आणि लहान मुले वगैरे तसेच तरुण मुले मूली दिसले की घरात शिरतात आणि घेवून जातात . मित्रांनो जास्तीत जास्त शेर करा ही नम्र विनंती !)


গাঢ়চিনচালে থেকে রানশেট, নিকানে, গনজাড এবং সারনি, এই গ্রামগুলি প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।


১৫ এপ্রিল একই মেসেজকে ফেসবুকে শেয়ার করেন পালঘর জেলার উপকূলের নিকটের দাহানু শহরের এক বাসিন্দা। তাঁর পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে। উনি আরও একটি বার্তা যুক্ত করে ফেসবুকে শেয়ার করেন যেখানে বলা হয়, চোরেরা দাহানু তালুকের বেশ কিছু গ্রামে লুটপাট করেছে। গাঢ়চিনচালে থেকে দাহানুর দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার। ফরওয়ার্ড-করা এই মেসেজটিতে অবশ্য চোরেদের কোনও সাম্প্রদায়িক পরিচয় দেওয়া হয়নি।

এই মেসেজটির একটি অংশকে বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায়: "আজ রাতে, চোরেরা দাহানু তালুকে ব্যাপক অঘাত হানে। রানকোল, আয়েনে, দাভোন, সাখরে, দাবলে, গরগাঁও, রায়তালি, গনজাড, পিম্পলশেট, ভাদনা, রানশেট, অভধানি, ধানোরি, চিনচারে, ঘোল, ভারাদ, ধমাত্নে, সারশি ও মহালক্ষ্মীগড় ইত্যাদি গ্রামে চোরেদের দেখা যায়। সতর্ক থাকুন। আরও অনেক গ্রামে চোরেরা ঢুকে পড়েছে। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে!"

আমরা স্থানীয় খবরগুলি দেখি। কিন্তু ওই সময় দাহানুতে কোনও চুরির রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। বুম দাহানুর এসডিপিও-র অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাঁদের প্রতিক্রিয়া পেলে, এই প্রতিবেদন আপডেট করা হবে।


নিকানে গ্রামের প্রধান সন্দেহজনক গতিবিধির অভিযোগ করলেন 

কাসা থানাতে অভিযোগ জানিয়ে লেখা নিকানে গ্রামের প্রধানের চিঠি বুমের হাতে এসছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১২ এপ্রিল কিছু অপরিচিত লোকজনকে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তার ফলে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। কাসা পুলিশকে পাঠানো চিঠির প্রতিলিপি নীচে দেওয়া হল।

চিঠিটি প্রকৃত কিনা, তা জানতে বুম কাসা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।


মুখেমুখে গুজব ছড়িয়ে পরে

পালঘর পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের বয়ান অনুযায়ী, চোরেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, এমন গুজব মুখে-মুখে ছরিয়ে পরে গাঢ়চিনচালেতে। কাসা থানার এক অফিসার বুমকে রবিবার জানান, "গাঢ়চিনচালে ও তার আশেপাশের এলাকার গ্রামীণ মানুষ ডিজিটাল বিষয়ে অজ্ঞ। লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই গুজব ছড়াতে থাকে যে পরিযায়ী চোরেরা গ্রামে লুটপাট করছে। গাঢ়চিনচালেতে গুজবটা মুখে-মুখেই ছড়িয়ে পরে।"

বুম দেখে এরকম গুজব খণ্ডন করার জন্য পালঘর পুলিশ মারাঠি ভাষায় রেকর্ড-করা বার্তা আর গ্রাফিকে প্রচার করেছিল। তাতে গুজবে কান না দেওয়ার জন্য মানুষের কাছে আবেদন করা হয়। এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার পালঘর পুলিশের তৈরি দুটি রেকর্ড-করা আবেদন বুমের কাছে পাঠান। ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকেই সেগুলি স্থানীয় মানুষের মধ্যে প্রচার করা হচ্ছিল। গুজব থেকে দূরে থাকতে বলা হয় সেগুলিতে।


গুজব খণ্ডনের জন্য পালঘর পুলিশের প্রচারের অডিও ক্লিপ নীচে শোনা যাবে।


পালঘর পুলিশ তাঁদের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ও সাম্প্রদায়িক মেসেজ ছড়ানোর বিরুদ্ধে সকলকে সাবধান ও সচেতন করতে থাকে।

ঘটনার দুদিন পরে, সাধুদের ওপর ওই আক্রমণের বিচলিত করার মত ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ পেলে, ঘটনাটিতে সাম্প্রদায়িক মাত্রা জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পালঘর পুলিশের মন্তব্য অনুযায়ী বুম নিশ্চিত হয় যে, আক্রান্ত ও আক্রমণকারীরা একই ধর্মের মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও একই কথা বলেন এবং ঘটনাটিতে সাম্প্রদায়িক রঙ না দেওয়ার জন্য নেটিজেনদের প্রতি আবেদন করেন।

আরও পড়ুন: পালঘর গণপিটুনির মূলচক্রী বলে মৃত তাবরেজ আনসারির ছবি শেয়ার করা হচ্ছে

Related Stories