Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
আইন

যৌন নিগ্রহের ক্ষেত্রে নাম প্রকাশ করা সম্পর্কে আইন কী বলে

আইপিসি অনুযায়ী যৌন নিগ্রহের শিকার বা নিগ্রহ হয়েছে বলে মনে হলে, সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশ করলে দু'বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

By - Ritika Jain | 12 Oct 2020 1:44 PM GMT

উত্তরপ্রদেশের হাথরসে ১৯ বছর বয়সী যে দলিত মেয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তার নাম প্রকাশ করার জন্য জাতীয় মহিলা কমিশন ভারতীয় জনতা পার্টির তথ্যপ্রযুক্তি শাখার প্রধান অমিত মালব্য, কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ ও বলিউড তারক স্বরা ভাস্করকে আলাদা আলাদা নোটিস পাঠিয়েছে

মহিলা কমিশনের নোটিসে বলা হয়েছে, "ওপরে উল্লিখিত কারণে, এই নোটিস পাওয়ার পর, আপনাকে কমিশনের কাছে গ্রহণযোগ্য জবাব দিতে হবে এবং সোশাল মিডিয়ায় ওই ধরনের ছবি/ভিডিও দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, আপনার অনুগামীরা সেগুলি ব্যাপক হারে প্রচার করছে, যা করার ব্যাপারে আইনের নিষেধাজ্ঞা আছে।"
সর্বোচ্চ মহিলা কমিশন ওই তিন জনকে তাঁদের টুইটারের পোস্টগুলি ডিলিট করারও নির্দেশ দেয় এবং ভবিষ্যতে যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য তাঁদের সতর্ক করে দেওয়া হয়।
কমিশনের নোটিসে মূল বিষয়টি স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যৌন নিগৃহের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্যাতিত বা নির্যাতিতার নাম কি প্রকাশ করা যায়? উত্তর হল, না।
ইন্ডিয়ান পেনাল কোড (আইপিসি) বা ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী, কোনও যৌন নিগৃহীত/নিগৃহীতা বা যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে এমন কোনও ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা নিষিদ্ধ। এই আইন ভাঙ্গার সাজা হল দু'বছরের হাজতবাস, বা জরিমানা বা দুইই। ২০১৮ সালে কাঠুয়া ধর্ষণ কাণ্ড যে ভাবে রিপোর্ট করা হয়েছিল, তার জন্য ১২ টি সংবাদ সংস্থার প্রতিটিকে ১০ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নিয়মাবলি
২০১৮ সালে, নিপুন সাক্সেনা মামলায় রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সমাজ, পুলিশ ও বৃহত্তর বিচার ব্যবস্থাকে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করে বলে, "এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, আমাদের সমাজে যৌন অপরাধের যিনি শিকার, বিশেষ করে ধর্ষণের শিকার যাঁরা, তাঁদের প্রতি অপরাধকারীর চেয়েও খারাপ ব্যবহার করা হয়।"
বিচারপতি মদন লোকুর ও দীপক গুপ্তর বেঞ্চ আরও বলে যে, যিনি ধর্ষণের শিকার "তিনি সমাজে তীব্র বৈষম্য ও সামাজিক অবমাননার শিকার হন"।
ওই ধরনের নির্যাতিতাদের কাজ পেতে অসুবিধে হয়, তাঁদের বিয়ে হয় না সহজে, এবং একজন স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে সমাজে স্বাভাবিক মেলামেশার ক্ষেত্রেও বাধা পান। "আমাদের ফৌজদারি আইনে, সাক্ষীদের রক্ষা করার যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই। আর সেই কারণেই, নিগৃহীতা ও তাঁর পরিচয় সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত জরুরি,"বলেন উচ্চতম আদালত। তারপর এ বিষয়ে এক নিয়মাবলি পেশ করেন বিচারপতিরা:
১) কোনও ব্যক্তি কোনও ভাবেই ছাপার অক্ষরে বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে বা সোশাল মিডিয়ায় নির্যাতিতার নাম প্রকাশ করবেন না বা এমন কোনও তথ্য প্রকাশ করবেন না যা থেকে নির্যাতিতার পরিচয় জানতে পারা যায় এবং তা সর্বজনবিদিত হয়ে পড়ে।
২) নির্যাতিতা যদি মারা যান বা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রেও তাঁর নাম প্রকাশ করা যাবে না। এমনকি তাঁর আত্মীয় পরিজন অনুমতি দিলেও না। একমাত্র কোনও এক বিশেষ পরিস্থিতির কারণে প্রয়োজন হলে তবেই তা করা যা্বে। কিন্তু এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন 'কমপিটেন্ট অথরিটি' বা যোগ্য কর্তৃপক্ষ। এবং বর্তমানে তিনি হলেন `সেসন্স জজ' বা দায়রা আদালতের বিচারপতি।
৩) ধর্ষণ বা পসকো আইনের বিবেচ্য কোনও অপরাধ সংক্রান্ত এফআইআর-এর বিষয় বস্তু প্রকাশ করা যাবে না।
৪) অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস, বা লঘু অপরাধে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া, বা অপর্যাপ্ত ক্ষতিপুরণের বিরুদ্ধে নির্যাতিতা যদি আবেদন করতে চান, তাহলে তাঁর পরিচয় প্রকাশ করার কোনও প্রয়োজন নেই, এবং প্রচলিত আইন অনুযায়ী সেই আবেদন গৃহীত হবে।
৫) নির্যাতিতার নাম রয়েছে এমন সব নথি পুলিশ সিল-করা খামে রাখবে। এবং সেগুলি যদি 'পাবলিক ডোমেইনে' বা প্রকাশ্যে যাচাই করার প্রয়োজন হয়, তাহলে পুলিশ নির্যাতিতার নাম মুছে দিয়ে সেই নথিগুলির প্রতিলিপি পেশ করবে।
৬) যে সব কর্তৃপক্ষ নির্যাতিতার পরিচয় জানেন, তাঁরা তা গোপন রাখতে দায়বদ্ধ।
৭) সরকার যত দিন না নতুন আইন আনছেন, ততদিন মৃত বা মানসিক ভারসাম্যহীন নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ্যে আনার জন্য যদি তাঁর নিকট আত্মীয়রা আবেদন করেন, তা হলে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন দায়রা বিচারপতি।
৮) পসকো কোর্টের আওতায় থাকা কোনও নাবালক/নাবালিকার নির্যাতনের ক্ষেত্রে, বিশেষ আদালত একমাত্র সেই নির্যাতিত/নির্যাতিতার স্বার্থ রক্ষার্থে তার নাম প্রকাশের অনুমতি দিতে পারে।
৯) সব রাজ্য/কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিকে অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা যেন আজ থেকে এক বছরের মধ্যে প্রতিটি জেলায় একটি করে 'ওয়ান-স্টপ সেন্টার' বা যেখানে একসঙ্গে সব বিষয়গুলি দেখা হবে, সেই রকম কেন্দ্র খোলেন।
যৌন নিগ্রহের শিকার যাঁরা, তাঁদের প্রতি সমাজচ্যুত বা অস্পৃশ্যের মতো ব্যবহার করা হয়
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মন্তব্য করা হয় যে, আমাদের সমাজ নির্দোষ নির্যাতিতাদের প্রতি সহানুভূতি জানানর বদলে তাঁদের 'অস্পৃশ্য' বলে গণ্য করে।
"যিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তাঁর প্রতি সমাজচ্যুতের মতো আচরণ করা হয় এবং সামজিক অবমাননার সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। অনেক ক্ষেত্রে তাঁর পরিবারও তাঁকে ফেরত নিতে অস্বীকার করে। রুঢ় বাস্তবটা হল, ধর্ষণের অনেক ঘটনার কথা জানানো হয় না। কারণ, নিগৃহীতার পরিবার তাঁদের 'সম্মানের' ভ্রান্ত ধারণা অঁকড়ে খাকতে চায়," বিচারক দীপক গুপ্ত লেখেন তাঁর রায়ে।
বিচারক গুপ্ত আরও লেখেন যে, ব্যাপারটা এখানেই শেষ হয় না। এফআইআর রেকর্ড হওয়ার পর, "পুলিশ সাধারণত নির্যাতিতাকে এমন ভাবে প্রশ্ন করে যেন তারা অভিযুক্তকে জেরা করছে।" "ন্যায় ব্যবস্থার সঙ্গে নির্যাতিতার প্রথম মুখোমুখী হওয়াটাই বেশ নেতিবাচক হয় । তাঁকে ভাবতে বাধ্য করা হয় যে, দোষটা তাঁরই। যেন, অপরাধটার জন্য তিনিই দায়ী," বলা হয়েছে ওই রায়ে।
বিচারকরা অনেক সময় নির্বাক দর্শক হয়ে থাকেন
নিগৃহীতার অসহনীয় অবস্থা এখানেই শেষ হয় না। "কোর্টে তাঁকে কঠোর জেরার মুখে পড়তে হয়। সেখানে তাঁর আচরণ ও চরিত্র নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলা হয়। বিচারক অনেক সময় চুপ করে বসে থাকেন এবং অভিযুক্তের আইনজীবীকে অবমাননাকর ও অপ্রয়োজনীয় পশ্ন করা থেকে বিরত করেন না।" উচ্চতম আদলত বলে যে, জেরা কাটছাঁট করার প্রয়োজন নেই, কিন্তু তাতে শালীনতা ও সম্ভ্রম বজায় রাখাটা জরুরি।

Related Stories