Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কি নির্ভয়ার গণধর্ষণকে সমর্থন করেছিলেন? একটি তথ্যযাচাই

একটি দক্ষিণপন্থী ওয়েবসাইটের দাবি, ২০১২ সালের অক্টোবরে, অর্থাৎ নির্ভয়ার ধর্ষণের দু মাস আগেই নাকি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় একটি লেখায় সে ধর্ষণের পক্ষে যুক্তি সাজিয়েছিলেন।

By - Krutika Kale | 24 Oct 2019 1:30 PM GMT

একটি দক্ষিণপন্থী ওয়েবসাইট দ্য ফ্রাস্ট্রেটেড ইন্ডিয়ান ২০১২ সালের একটি মতামতমূলক রচনা জিইয়ে তুলে মিথ্যে করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে চালাচ্ছে, যে লেখাটিতে তিনি নাকি বলেছিলেন, "নির্ভয়ার ধর্ষকরা যৌনসুখের নাগাল পেত না, তাই তারা ধর্ষণ করেছে।"

বুম দেখেছে, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে চালানো এই উদ্ধৃতিটি আদৌ তার নয়। তা ছাড়া এই লেখাটি যখন রচিত হয়েছে, তখনও নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ড ঘটেইনি।

লেখাটি হিন্দুস্তান টাইমস-এ প্রকাশিত হয়েছিল এবং দেশে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সেটি লিখেছিলেন।

দ্য ফ্রাস্ট্রেটেড ইন্ডিয়ানের প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট।

প্রতিবেদনটি পরে মুছে দেওয়া হয়, কিন্তু বুম তার একটি সংস্করণ উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে। প্রতিবেদনটির আর্কাইভ বয়ান দেখতে ক্লিক করুন এখানে

১৫ অক্টোবর প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছিল, "অন্য অনেক বামপন্থী উদারনীতিক বুদ্ধিজীবীর মতো অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনেক নিকৃষ্ট মানের উদ্ভট যুক্তির অবতারণা করে থাকেন। ২০১২ সালের অক্টোবরে যখন দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনাটি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ এবং ক্রোধ তীব্র আকার নিয়েছে, তখন তিনি তর্ক জোড়েন, যৌন তৃপ্তির সুযোগের অসাম্যের কারণেই ধর্ষণ হয়ে থাকে। তিনি বলেন—"যৌন কামনার থেকে প্রখরতর তাড়না খুব কমই আছে এবং যৌন তৃপ্তির সুযোগ না-পাওয়ার চেয়ে বড় অসাম্যও আর নেই।" হিন্দুস্তান টাইমসে তিনি এ কথা লিখেছিলেন।"

দ্য ফ্রাস্ট্রেটেড ইন্ডিয়ান ওয়েবসাইটটির আগে নাম ছিল রাইটলগ। নিজেকে এটি একটি' 'মধ্য-দক্ষিণপন্থী বিকল্প' হিসাবে বর্ণনা করে থাকে। ইতিপূর্বেও বুম এই ওয়েবসাইট প্রচারিত ভুয়ো খবরের তথ্যযাচাই করেছে।

আরও পড়ুন: 'সরকারী তথ্যসূত্র' বলে অমর্ত্য সেনকে নিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সম্পাদকের অসত্য ট্যুইট

বেশ কয়েকজন সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এই ভুয়ো প্রতিবেদনটিকে বিশ্বাস করে সেটি শেয়ার করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী যাকে ফলো করেন, এমন একজন টুইটার ব্যবহারকারী গৌরব প্রধানও প্রতিবেদনটি শেয়ার করে লিখেছেন, "যৌনতার অর্থনীতির জন্য নোবেল পুরস্কার! দারিদ্র্যের অর্থনীতি থেকে গরিবের যৌনক্ষুধাও এর মধ্যে পড়ে।" এর আগেও অবশ্য বহুবার বুম ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর জন্য প্রধানের কুকর্ম ফাঁস করেছে।



টুইটটি দেখা যাবে । টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে

প্রতিবেদনটি, বলা বাহুল্য, মুছে দেওয়া হয়েছে এবং এখন আর পাওয়া যায় না। কিন্তু অনেকেই তার স্ক্রিনশট ব্যবহার করে বলে চলেছে যে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় নির্ভয়ার ধর্ষকদের সমর্থন করেন।

Full View

সম্প্রতি ভারতীয়-মার্কিন অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, এস্থার ডাফলো এবং মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গে যৌথভাবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

তথ্য যাচাই

বুম দেখেছে, দ্য ফ্রাস্ট্রেটেড ইন্ডিয়ান ওয়েবসাইটের দাবিটি সম্পূর্ণ ভুয়ো।
অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবন্ধটি হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত হয়েছিল ৩০ অক্টোবর, নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রায় দু মাস আগে, যা ঘটে ১৬ ডিসেম্বর।

নেটিজেনদের মধ্যেও কেউ কেউ বিষয়টির উল্লেখ করেছেন।



অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে যে, দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার মূলে রয়েছে ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা।

তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'র একটি অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদপত্রগুলিকে 'ধর্ষণকে মহিমান্বিত করার' দায়ে অভিযুক্ত করেছিলেন এবং সংবাদপত্র 'সংবাদ-দূষণ' করে বলে জানিয়েছিলেন। তিনি কোনও বিশেষ সংবাদপত্রের নাম করেননি, কিন্তু তার আগের কয়েকদিন ধরে বর্ধমান জেলায় এক প্রথম বর্ষের কলেজছাত্রীর গণধর্ষণ নিয়ে লাগাতর হৈ-চৈ করার প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, তার রাজ্যকে ধর্ষণপ্রবণ রাজ্য বলে আকার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, রিপোর্ট করে দ্য হিন্দু

ওই অনুষ্ঠানেই তিনি বলেন, "আগেকার দিনে ছেলেমেয়েরা হাত-ধরাধরি করে হাঁটলেও অভিভাবকরা তাদের বকাবকি করতেন, এখন সব কিছুই খোলামেলা, এ যেন একটা খোলা বাজার, যেখানে অনেক বিকল্প খোলা রয়েছে।"

Full View

এই পরিপ্রেক্ষিতেই অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, "আমি সব বিষয়ে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে একমত নই। কিন্তু তিনি যখন বলেন যে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রকাশ্যে ছেলেমেয়েদের ঘনিষ্ঠতার প্রদর্শনীর একটা সম্পর্ক রয়েছে, তখন সেটা যে খুব একটা ভুল বলেন, তা আমি মনে করি না।"এই প্রসঙ্গেই অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উক্তি, "যৌন কামনার চেয়ে প্রখরতর তাড়না খুব কমই আছে এবং যৌন তৃপ্তির সুযোগ না-পাওয়ার চেয়ে বড় অসাম্যও বিশেষ নেই। সব সময় সব ধনী পুরুষরাই সব সুন্দরী নারীদের লাভ করে, অন্তত সুন্দরী বলতে হলিউড কিংবা বলিউড যাদের বোঝায়।"

সেই সঙ্গেই অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথাও জুড়ে দেন যে, "কেউ যেন মনে না করে যে তিনি ধর্ষণের পক্ষ সমর্থন করছেন। তবে তিনি এটাও মনে করিয়ে দেন যে শুধু বিত্তের অসাম্য ছাড়াও আরও নানা ধরনের অসাম্য রয়েছে সমাজে।"

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসংখ্যার বৃদ্ধিকেও ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে নির্দেশ করেন। তিনি বলেন, "আপনারা বলছেন-- ধর্ষণ বেড়েছে, তা জনসংখ্যাও তো বেড়েছে।" বস্তুত, ২০১২ সালে পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'তার সরকারকে হেয় করার চক্রান্ত' এবং 'সাজানো ঘটনা' বলে নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তার সুর পাল্টে যায় এবং তিনি জাতীয় মহিলা কমিশনের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাসও দেন।

এর আগেও বুম নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ে ভুয়ো খবরের পর্দাফাঁস করেছে। তা পড়তে ক্লিক করুন এখানে

Related Stories