সোশাল মিডিয়ায় বাংলা সংবাদ চ্যানেল এবিপি আনন্দ (ABP Ananda)-এর ভুয়ো গ্রাফিক তৈরি করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি সভাপতি সাংসদ দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) নামে ভুয়ো বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। ওই ভুয়ো গ্রাফিকে দাবি করা হয়েছে, সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ''বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর শুভেন্দুকে ঘাড় ধরে বের করবো।''
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটমুখী উত্তাপে কথার পারদ চড়ছে সব রাজনৈতিক দলেই। তা কখনও ব্যক্তিগত আক্রমণ ছাপিয়ে হুমকি ও প্রতি আক্রমণ হয়ে উঠছে। শুভেন্দু অধিকারী ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর আগে শুভেন্দু অধিকারী বিধায়ক পদ, পরিবহন মন্ত্রীত্ব ও একাধিক সরকারি পদ থেকে ইস্তফা দেন। এরপর একাধিক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বিজেপিতে যোগদান করে আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন বেশ কয়েকজন নেতা।
দিলীপ ঘোষের ছবি ব্যবহার করে গ্রাফিকটিতে লেখা হয়েছে, 'বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর শুভেন্দুকে ঘাড় ধরে বের করবো বক্তা-দিলীপ ঘোষ।'
পোস্টটি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''গদ্দার শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী দের জন্য সুখবর দিলীপ ঘোষ এর মন কি বাত শুনে কী ভাবছেন আপনারা। গদ্দারদের ঠিকানা নরকেই হয়। এর ফল তো ভোগ করতে হবে একদিন না একদিন। দেখ কেমন লাগে।''
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে এবিপি আনন্দের নামে তৈরি এই গ্রাফিক উইন্ডোটি ভুয়ো। এবিপি আনন্দের সংবাদে এই ধরণের ফন্ট ব্যবহার করা হয়না।
দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারী দু'জনেই প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। অথচ, দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারী সম্পর্কে এই ধরণের মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যমে এই নিয়ে কোনও প্রতিবেদন নেই।
বুম দেখে ভাইরাল গ্রাফিকটিতে 'Saddam Sk' জলছাপ রয়েছে। ভাইরাল হওয়া এই ভুয়ো গ্রাফিকের কারখানা "সাদ্দাম শেখ" নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী। তাঁর প্রোফাইলে বুম একই গ্রাফিক উইন্ডোতে দিলীপ ঘোষের ছবি সহ অন্য ভুয়ো বক্তব্য দেখতে পায়। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ভুয়ো খবর ছড়ানো ব্যক্তির ফেসবুক প্রোফাইলটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
নিচে ভাইরাল গ্রাফিক ও ফেসবুক ব্য়বহারকারীর পেজে থাকা গ্রাফিকের মধ্যে মিল তুলনা করা হল।
ওই একই প্রোফাইল থেকে একই ধরনের এবিপি আনন্দ চ্যানেলের জাল গ্রাফিক ব্যবহার করে ভুয়ো খবর ছড়ানো হয় বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের নামেও। সেই ভুয়ো গ্রাফিকে দাবি করা হয় বাবুল নাকি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করছেন, বুম সে সময় বিষয়টির তথ্যযাচাই করে।
একই কৌশলে জাল গ্রাফিক ব্যবহার করে ভুয়ো খবর ছড়ানো হয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে। ভুয়ো দাবি করা হয় তিনিও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করছেন। বুম এই ভুয়ো খবরেরও তথ্যযাচাই করেছিল।
আরও পড়ুন: জিইয়ে উঠল তফশিলি জাতি ও উপজাতি পড়ুয়াদের নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভুয়ো মন্তব্য