বিনায়ক দামোদর সাভারকরের (Vinayak Damodar Savarkar) জীবন নিয়ে তৈরি একটি সিনেমার দৃশ্যকে এক ব্রিটিশ সাংবাদিকের (British Journalist) রেকর্ড করা জীবন্ত ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে। ভাইরাল এই ফুটেজকে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সেলুলার জেলে কাটানো সাভারকরের দিনগুলির বিবরণ বলে প্রচার করা হচ্ছে।
বুম দেখে দৃশ্যটি 'লাইফ অফ শ্রী বিনায়ক দামোদর সাভারকর' নামের একটি সিনেমার ভিডিও, যেটি প্রেম বৈদ্য নামে এক স্বল্প দৈর্ঘ্যের ফিল্ম নির্মাতা বানিয়েছিলেন।
ভিডিওটি টুইট করা হয়েছে এক ব্যক্তির যাচাই-করা হ্যান্ডেল থেকে, যিনি নিজেকে একটি 'সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং জাতীয়তাবাদী লেখক' বলে বর্ণনা করে থাকেন। অতীতেও বুম ভুয়ো তথ্য প্রচারকারী এই ব্যক্তির ছড়ানো গুজবের পর্দাফাঁস করেছে।
হিন্দি ক্যাপশন সহ ভিডিওটি টুইট করে লেখা হয়, "মহান দেশভক্ত বীর সাভারকরের কালাপানিতে গিয়ে আন্দামানের সেলুলার জেলে শাস্তি ভোগ করার একটি বিরল ভিডিও এক ব্রিটিশ সাংবাদিক পোস্ট করেছেন l ভিডিওটিতে সে সময়কার জীবনযাত্রা ধরা রয়েছে। একবার যদি এই দৃশ্যটি আপনি দেখেন, তাহলে বুঝবেন, সাভারকর শুধু বীর ছিলেন না, মহাবীর, এমনকী পরমবীরও ছিলেন!"
(হিন্দিতে মূল ক্যাপশন: एक ब्रिटिश पत्रकार ने अंडमान की सेल्युलर जेल में कालापानी की सजा काट रहे महान देशभक्त वीर सावरकर का दुर्लभ वीडियो फुटेज पोस्ट किया है। जो उस समय के जीवन को दिखाता है, आप एक बार यह दुर्लभ फुटेज देखने के बाद पता चलेगा वीर सावरकर जी वीर नही, महावीर परमवीर थे।)
পোস্টটির আর্কাইভ বয়ান দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
একই ভিডিও একই ধরনের ক্যাপশন সহ ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: জখম মহিলার পুরনো ছবি জোড়া হল মডেল পুনম পাণ্ডের সঙ্গে
তথ্য যাচাই
বুম ইউটিউবে সাভারকরের জীবন নিয়ে তৈরি ভিডিওর খোঁজখবর করতে গিয়ে ২০১৪ সালের ১৪ অগস্ট কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের যাচাই করা চ্যানেলের আপলোড করা একটি ভিডিওর খোঁজ পায়, যার শিরোনাম-"শ্রী বিনৈায়ক দামোদর সাভারকরের জীবন"।
ভিডিওটির বিবরণী অংশে বলা হয়, "শ্রী বিনায়ক দামোদর সাভারকর ছিলেন এক অকুতোভয় স্বাধীনতা-সংগ্রামী, লেখক, সমাজ-সংস্কারক, কবি, নাট্যকার, ঐতিহাসিক, রাজনীতিক ও দার্শনিক। সাভারকরের চিন্তাধারা জাতি গঠনের প্রতিটি দিক নিয়ে আলোকপাত করেছে এবং আজকের যুগেও যা সমান প্রাসঙ্গিক।এই সিনেমাটিতে তাঁর জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।"
ভাইরাল হওয়া ভিডিওর দৃশ্যগুলি এই ফিল্মের ২৭ মিনিট ২৯ সেকেন্ড থেকে ২৯ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড পর্যন্ত সময়ে দেখা যাবে। ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্য এবং কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের পোস্ট করা সিনেমার দৃশ্যের তুলনা নীচে করা হল।
এই সূত্র অনুসরণ করে আমরা আরও একটু অনুসন্ধান চালাই এবং দেখি যে, এটি ভারতের বিপ্লবী স্বাধীনতা-সংগ্রামী সাভারকরকে নিয়ে ১৯৮৩ সালে তৈরি একটি সিনেমা। কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের ওয়েবসাইটেও সিনেমাটি সেভাবেই তালিকাভুক্ত রয়েছে।
তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীন ফিল্মস ডিভিসনের ওয়েবসাইট ঘেঁটে সাভারকরকে নিয়ে আমরা ৩টি সিনেমার হদিশ পাই। তিনটি ফিল্মই প্রেম বৈদ্য দ্বারা নির্মিত। বৈদ্য বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। একজন সহকারী চিত্রগ্রাহক থেকে বৈদ্য কী ভাবে ভারত সরকারের ফিল্মস ডিভিসনের একজন অগ্রণী পরিচালক ও প্রযোজক হয়ে উঠলেন, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদনে তার সবিস্তার বিবরণ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের হিংসায় নয়, ২০১৫ সালে পদপিষ্ঠে স্বজন হারিয়ে শোকার্ত নারী