চার মাস ধরে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অনেক কাশ্মীরের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট অচল হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ দিন হোয়াটসঅ্যাপে নিষ্ক্রিয় থাকার ফলেই এ রকম হয়েছে।
বাজফিড এই ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তার পর অনেকেই কাশ্মীরে যা হচ্ছে তা নিয়ে টুইটারে নিজেদের উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তারা অনেকেই কাশ্মীরের বহু মানুষের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে যাওয়ার স্ক্রিনশট নিয়ে তা টুইটারে পোস্ট করেছেন।
Scoop: Kashmiris disappeared from WhatsApp overnight due to a FB policy that deletes inactive accounts automatically after 120 days. The internet has been shut down in Kashmir for 4 months now. No word on any concessions given the circumstances in Kashmir https://t.co/cwTLIPu1vV
— ¯\_(ツ)_/¯ (@PranavDixit) December 5, 2019
টুইটারে এক জন লিখেছেন, ফেসবুকের নীতি হল, চার মাস নিষ্ক্রিয় থাকলে অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেওয়া হবে। কিন্তু কাশ্মীরে চার মাস যাবৎ ইন্টারনেট বন্ধ, তাই কাশ্মীরিরা দলে দলে বাদ পড়ছেন বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে। কাশ্মীরের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি তাদের।
Today, everyone witnessed the accounts of their family members and loved ones in #Kashmir automatically being removed from Whatsapp due to 4 months of inactivity. No internet for 4 months. https://t.co/wPQ0AiA6km
— StandWithKashmir (@standwkashmir) December 5, 2019
২০১৯ সালের ৫ অগস্ট ভারত সরকার কাশ্মীর উপত্যকায় সব ধরনের যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়।
সেই সময় থেকে কাশ্মীরে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করা হয়েছে।
চার মাস পর এখনও এই অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা নেই এবং তার ফলে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
টুইটার ব্যবহারকারীরা প্রশ্ন তুলেছেন যে ১২০ দিন ধরে ব্ল্যাক আউট থাকার পর হঠাৎ করে এ রকম কেন হচ্ছে।
🛑 @WhatsApp Please pay attention to this. There is no Internet in Kashmir for the past 4 months now, and your algorithm is deleting Kashmiri Whatsapp accounts which have been inactive for over 120 days, for no fault of theirs.@evgenymorozov @zeynep @Snowden @AOC @PopTechWorks https://t.co/PbNRdVTfRi
— Shehla Rashid (@Shehla_Rashid) December 5, 2019
হোয়াটসঅ্যাপের নিষ্ক্রায়তা নীতি:
যদি আপনি দীর্ঘ দিন ধরে হোয়াটসঅ্যাপে নিষ্ক্রিয় থাকেন, তা হলে কী ঘটতে পারে? কত দিন ধরে অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয়, তার ওপরই এই বিষয়ে সংস্থার নীতি নির্ভর করছে।
৪৫ দিন নিষ্ক্রিয় থাকলে ওই হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী অন্য কোনও ফোন থেকে ওই অ্যাকাউন্টে ঢোকার চেষ্টা করলে ওই অ্যাকাউন্টের সমস্ত ডেটা ডিলিট হয়ে যাবে। হোয়াটসঅ্যাপের বক্তব্য, যদি ওই নম্বর অন্য কাউকে দেওয়াও হয়, তা হলে এই নীতির ফলে এক জনের ব্যক্তিগত তথ্য অন্য কারও কাছে যাবে না।
১২০ দিন ধরে নিষ্ক্রিয় থাকলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বুম হোয়াটসঅ্যাপের এক জন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে এই নিয়মের ফলে বহু কাশ্মীরি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী তাদের অ্যাকাউন্টের মালিকানা খুইয়েছেন।
এই মুখপাত্র বুমকে আরও জানান, "গ্রাহকরা যাতে সর্বত্র ব্যক্তিগত ভাবে নিজেদের বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, হোয়াটসঅ্যাপ সে ব্যাপারে সব সময় যত্নবান। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তথ্য জমা রাখার মাত্রা মেনে চলার জন্য ১২০ দিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যায়। ইন্টারনেট ব্যবস্থা ফেরত এলে ব্যবহারকারীদের আবার নতুন করে গ্রুপে ঢোকাতে হবে।"
হোয়াটসঅ্যাপের এই নিয়মের ফলে দীর্ঘ দিন ধরে নিষ্ক্রিয় থাকার কারণেই কাশ্মীরি ব্যবহারকারীরা দলে দলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বাদ পড়ছেন।
১২০ দিন ও তার পর
যদিও ইন্টারনেট না থাকার ফলে কাশ্মীরি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা এখনও জানেন না যে তাদের নম্বর নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। বন্ধু ও পরিবারের লোকেরা গ্রুপ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন দেখে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের খারাপ লাগা জানিয়েছেন। অনেকে আবার জানিয়েছেন যে এক সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট চলে যাওয়ার ব্যপারটি কাশ্মীরে চার মাস ধরে ইন্টারনেট না থাকার ঘটনার প্রতীক। টুইটারে #KashmirGagged ট্রেন্ড ছড়িয়ে পড়েছে।
Sister automatically disappeared from @WhatsApp group because she couldn't use internet for the last 122 days
— Baba Umar (@BabaUmarr) December 5, 2019
I remember, initially, voices from India were 'hey, India's blockade on Kashmir is momentary, live with it until normalcy returns' pic.twitter.com/WqosUkrYXz
সরকার ল্যান্ডলাইন ও পোস্টপেড পরিষেবা চালু করেছে কিন্তু ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও শুরু হয়নি। তার ফলে কাশ্মীরের মানুষ খুব অসুবিধায় পড়েছেন।
ডঃ শাহনওয়াজ কালু, দিল্লিতে বসবাসকারী একজন কাশ্মীরি। তিনি বুমকে জানিয়েছেন যে ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়ার জন্য মানুষকে দিল্লি পর্যন্ত আসতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, "আমার এক বন্ধুর একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করার ছিল। তাকে দিল্লি আসতে হয়, তার পর ফর্ম ভরার পর আবার এই পথ ফিরে যেতে হয়। পোস্টপেড পরিষেবায় ফোন করা যাচ্ছে, কিন্তু এসএমএস করা যাচ্ছে না। তার ফলে ওটিপি সংক্রান্ত কোনও পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে আধার এবং ব্যাঙ্কের পরিষেবাও আছে।"
After 4 months of total communication blackout, @WhatsApp is automatically deleting Kashmiris from groups.#Kashmir pic.twitter.com/GD1GXKNrX6
— Dr. Shahnawaz B. Kaloo (@DrKaloo) December 4, 2019