দক্ষিণপন্থী ওয়েবসাইট স্বরাজ্য একটি বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা দাবি করেছে যে ছপাক ছবিটির নির্মাতারা অ্যাসিড আক্রমণকারীর মুসলিম পরিচয় গোপন করার জন্য তার নাম বদলে দিয়েছে।
ছবিটি প্রযোজনা করেছেন দীপিকা পাড়ুকোন। তিনিই ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। লক্ষ্মী অগ্রবাল নামে এক অ্যাসিড-আক্রান্তের জীবনের ওপর ভিত্তি করে ছবিটি তৈরি হয়েছে।। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার দিনকয়েক আগে কিছু টুইটার ব্যবহারকারী অভিযোগ আনেন যে, ছবিতে ওই অ্যাসিড আক্রমণকারীর নাম নইম খান থেকে পাল্টে রাজেশ করা হয়েছে।
আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে আক্রমণকারীর মুসলিম পরিচয় গোপন করার জন্য এবং তাকে এক জন হিন্দু হিসাবে দেখানোর জন্যই এই কাজ করা হয়েছে।
Waise why is the perpetrator who threw acid is called 'Rajesh Sharma' in that movie instead of Nadeem Khan, who was the REAL culprit who threw acid on Lakshmi Agarwal?
— Shefali Vaidya (@ShefVaidya) January 8, 2020
Chhapak is based on true Real Life story of Laxmi the Асid Attack victim. Then WHY Perpetrator name changed from Nadeem to Rajesh ?? #boycottchhapaak #boycottdeepikapadukone pic.twitter.com/HqE89L2uak
— Rosy (@rose_k01) January 8, 2020
If a Nadeem who was the man who threw acid on the brave girl on whom the @deepikapadukone movie #Chhappak is based has been changed to Rajesh then it is shameful, deceitful and deliberate. #boycottchappak
— Savio Rodrigues 🇮🇳 (@PrinceArihan) January 8, 2020
এই সব অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য নিয়ে স্বরাজ্য একটি প্রতিবেদন লেখে যার শিরোনাম দেওয়া হয়, "বলিউডের নিজস্ব পদ্ধতি: দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত ছপকে অ্যাসিড আক্রমণকারীর নাম নইম খান থেকে বদলে হয়ে গেল রাজেশ।" এই প্রতিবেদনটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
এই অভিযোগের একমাত্র উৎস হল ইন্টারনেট মুভি ডাটা বেস। ব্যবহারকারীরা আইএমডিবির পেজে ছবির চরিত্রদের নাম ঘটনাটির চরিত্রদের আসল নামের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন এবং তাদের ধারণা হয় যে ছবিতে অ্যাসিড আক্রমণকারীর নাম রাজেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বরাজ্যের এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে কিছু অনুমানের ওপর ভিত্তি করেই এই অভিযোগটি তোলা হয়েছে। প্রতিবেদনে এই অভিযোগটির সপক্ষে কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়নি।
বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী হুমকি দিয়েছেন, যদি সত্যিই আক্রমণকারীর নাম পাল্টে তাকে মুসলমানের বদলে হিন্দু হিসেবে দেখানো হয়ে থাকে, তবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Ishkaran is drafting a legal notice to Deepika Padukone & producers, if they have changed name of accused from Muslim in real life to a Hindu name.
— Subramanian Swamy (@Swamy39) January 8, 2020
That is defamation.
For details follow @ishkarnBHANDARI
দীপিকা পাড়ুকোন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই অভিযোগগুলি এসেছে। কয়েকদিন আগে কিছু মুখোশধারী লোক বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রমণ করে। এই ঘটনায় নিগৃহীতদের সমর্থন জানাতে দীপিকা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে যান।
তথ্য যাচাই
বুম নিউজলন্ড্রির সিইও অভিনন্দন শেখরির সঙ্গে কথা বলে। অভিনন্দন ইতিমধ্যে এই ছবিটির প্রিভিউ দেখেছেন। শেখরি বুমকে নিশ্চিত ভাবে জানান যে, নির্মাতারা কোনও চরিত্রের ধর্ম বদলাননি, শুধুমাত্র তাদের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে।
Shocking (or maybe not) that such demonstrable misinformation is carried. I watched the screening last night & can tell you with certainty the religion of attacker has not changed. Film has remained accurate to the case. Opinidia ko bachane ke chakkar mein khud Opindia ban gaye.. https://t.co/Jxc0ZCEDzJ
— Abhinandan Sekhri (@AbhinandanSekhr) January 8, 2020
তিনি বলেন, "অ্যাসিড আক্রমণকারীর নাম বদলে বাব্বু করা হয়েছে, যেটি আসলে বশির থেকে ছোট করে করা হয়েছে।" উল্লেখ্য যে আক্রমণকারীর আসল নাম নইম খান, যাকে গুড্ডু বলে ডাকা হত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চলচ্চিত্র সমালোচকের সঙ্গেও বুম কথা বলে। তিনিও ছবিটির প্রিভিউ দেখেছেন। তিনিও বুমকে নিশ্চিত ভাবে জানান যে অ্যাসিড আক্রমণকারীর নাম সত্যিই বশির, রাজেশ নয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই স্বরাজ্য-র দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। জানান যে তাদের প্রতিবেদনটি মিথ্যা খবরের ভিত্তিতে রচিত এবং তা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। স্বরাজ্য তখন প্রতিবেদনটির শিরোনাম পাল্টে লেখে— "ছপক নিয়ে বিক্ষোভের পর সংবাদে প্রকাশ, সিনেমায় প্রধান অভিযুক্ত নইম খানকে হিন্দু নাম দেওয়া হয়নি।"