সোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল জামাতি ইসলামের বিক্ষোভ সমাবেশের ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে সেটি পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা।
ভাইরাল হওয়া ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে জনবহুল রাস্তার এক জন সমাবেশে এক ব্যক্তিকে উগ্র বক্তব্য পরিবেশন করতে দেখা যায়। তার বক্তব্য পরিবেশনের সময় জনতাকে প্রতিক্রিয়া দিতেও দেখা যায়। দূরের স্থাপত্য দেখে অনুমান করা যায় সম্ভবত কোনও মসজিদ প্রাঙ্গনে এই জনসমাবেশ হচ্ছে।
ওই ভিডিওটিতে বলতে শোনা যায়, ''কোথায় আছো তোমরা। আমার হৃদয়বান মুসলমান। আগুন জ্বালাও প্রত্যেকটি হিন্দু মন্দিরে। দেখুক মুদি সরকার…''
ফেসবুক পোস্টে ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে, ''"আগুন জ্বালাও প্রত্যেকটি হিন্দু মন্দিরে, দেখুক মোদী সরকার।" বাংলার প্রসাশন এখন কোথায়? এদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি প্রশাসনকে।''
আরও পড়ুন: লকডাউন ভাঙায় পূজারীর বিরুদ্ধে রেওয়া পুলিশের পদক্ষেপে লাগলো সাম্প্রদায়িক রঙ
ভিডিওটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের ফেসবুক পাতাতেও একই বয়ানে শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওটি নীচে দেখুন। ভিডিওটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখেছে ভিডিওটি বাংলা অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের কোনও স্থানে আয়োজিত সমাবেশের অংশ নয়, মূল ভিডিওটি বাংলাদেশের চট্টোগ্রামের একটি রাজনৈতিক দল আয়োজিত মোদী বিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশের অংশ।
বুম ভিডিওটির মূল কয়েকটি ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইউটিউবে একই ভিডিওর হদিস পেয়েছে। ৮ মার্চ ২০২০ তারিখে ইউটিউবে আপলোড করা ভিডিওটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছিল, ''চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ হতে ঘোষণা বাংলাদেশের সব মন্দিরে আগুন জ্বালিয়ে দাও, মোদী সরকার দেখুক।''
আরও পড়ুন: পুলিশের গায়ে থুতু ছেটানোর ভিডিওটির সঙ্গে কোভিড-১৯ এর কোনও সম্পর্ক নেই
বুম গুগুল ম্যাপের ''চট্টোগ্রাম আন্দর কিল্লা জামে মসজিদ'' লিখে সার্চ করে ভিডিওটির অবস্থান সম্পর্কে সুনিশ্চিত হতে পেরেছে। স্ট্রিট ভিউয়ে সার্চ করে 'আলিফ' নামের দোকানটিকে চিহ্নিত করতে পেরেছে। নীচে ভাইরাল ভিডিও ও গুগুল ম্যাপের ছবির তুলনা দেওয়া হল।
দৈনিক পূর্ব দেশ-এর সংবাদ প্রতিবেদনের সূত্র থেকে জানা যায় শুক্রবার ৬ মার্চ ২০২০ বাংলাদেশের চট্টোগ্রামের আন্দর কিল্লা শাহী জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে মোদী বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল জামাতি ইসলাম। ওই রাজনৈতিক দলটি দিল্লি দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে। বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর। পরে করোভাইরাস আতঙ্কের জেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওই সফর বাতিল করা হয়। এব্যাপারে প্রকাশিত আরও দুটি প্রতিবেদন পড়া যাবে এখানে ও এখানে।