নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, ১৭তম লোকসভার জন্য সাধারণ নির্বাচন সাত পর্বে অনুষ্ঠিত হবে এপ্রিল ১১ থেকে মে ১৯, ২০১৯’র মধ্যে। ভোট গণনা হবে মে ২৩। এই নির্বাচন হবে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যাতে ভারতের ১৩০ কোটি মানুষের মধ্যে ৯০ কোটি ভোটদাতা অংশ নেবেন।
লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ, সিকিম এবং ওড়িশায় বিধানসভা নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধিও লাগু হয়ে গেছে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক সংখ্যাতত্ত্ব আমরা আপনাদের জন্য পেশ করছি।
নির্বাচনী তারিখগুলি কী?
নির্বাচন হবে সাত পর্বে
ভোট গণনা হবে বৃহস্পতিবার, মে ২৩
পর্ব-১: নির্বাচনের তারিখ, এপ্রিল ১১
আসন সংখ্যা: ৯১
পর্ব-২: নির্বাচনের তারিখ, এপ্রিল ১৮
আসন সংখ্যা: ৯৭
পর্ব-৩: নির্বাচনের তারিখ, এপ্রিল ২৩
আসন সংখ্যা: ১১৫
পর্ব-৪: নির্বাচনের তারিখ, এপ্রিল ২৯
আসন সংখ্যা: ৭১
পর্ব-৫: নির্বাচনের তারিখ, মে ৬
আসন সংখ্যা: ৫১
পর্ব-৬: নির্বাচনের তারিখ, মে ১২
আসন সংখ্যা: ৫৯
পর্ব-৭: নির্বাচনের তারিখ, মে ১৯
আসন সংখ্যা: ৫৯
অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ, সিকিম আর ওড়িশার বিধানসভা নির্বাচনও লোকসভা নির্বাচন চলাকালেই হবে। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে বিধানসভা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে রাষ্ট্রপতির শাসন চলছে সেখানে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, নির্বাচন কমিশন লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করার কথা ঘোষণা করেনি।
সব মিলিয়ে ৩৪ বিধানসভা আসন খালি পড়ে আছে সারা ভারতে। তার মধ্যে ২৪ আসন তামিলনাডুতে। ওই সব আসনেও লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই নির্বাচন করা হবে।
কোন রাজ্যে কত পর্ব
যে সব রাজ্যে এক পর্বে নির্বাচন হবে:
অন্ধ্রপদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ, গোয়া, গুজরাট, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, কেরল, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, পাঞ্জাব, সিকিম, তেলেঙ্গানা, তামিলনাডু, উত্তরাখন্ড, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লাক্ষাদ্বীপ, দামান ও দিউ, দাদরা ও নগর হাভেলি, এবং চন্ডীগড়।
যে সব রাজ্যে দু পর্বে নির্বাচন হবে:
কর্ণাটক, মনিপুর, রাজস্থান, ত্রিপুরা
যে সব রাজ্যে তিন পর্বে নির্বাচন হবে:
অসম, ছত্তিশগড়
যে সব রাজ্যে চার পর্বে নির্বাচন হবে:
ঝাড়খন্ড, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা
যে সব রাজ্যে পাঁচ পর্বে নির্বাচন হবে:
জম্মু ও কাশ্মীর
যে সব রাজ্যে ছয় পর্বে নির্বাচন হবে:
কোনও রাজ্য নয়।
যে সব রাজ্যে সাত পর্বে নির্বাচন হবে:
বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ।
কতজন ভোটদাতা অংশগ্রহণ করার যোগ্য
এটা হবে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক অনুশীলন, যাতে অংশ নেবেন ৯০ কোটি ভোটদাতা।
নির্বাচন কমিশন নীচের সংখ্যাগুলি প্রকাশ করেছে।
• ১৮–১৯ বছর বয়সের মধ্যে ভোটদাতাদের সংখ্যা ১.৫ কোটি, যা সামগ্রিক ভোটদাতার ১.৬৬%
• ৩৮,৩২৫ তৃতীয় লিঙ্গের ভোটদাতা এবারের নির্বাচনে নথিভুক্ত হয়েছেন
• ৭১,৭৩৫ বিদেশে বসবাসকারী ভোটার এবার নথিভুক্ত হয়েছেন
• ১৬.৭ লক্ষ প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্য এবার ভোটদাতা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছেন
নির্বাচনী যন্ত্র ব্যবস্থা: ইভিএম আর পোলিং বুথ
• ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে ১০০% ক্ষেত্রেই
• নির্বাচন কমিশনের রয়েছে ১৭.৪ লক্ষ ভিভিপিএটি, ২৩.৩৫ কন্ট্রোল ইউনিট, ১৬.৩৫ ব্যালট ইউনিট
• ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার নির্বাচনী বুথের সংখ্যা বেড়েছে ১০.১%। ৯.২৮ লক্ষ থেকে ১০.৩৫ লক্ষ
• নির্বাচন কমিশন ইভিএম’এ প্রার্থীদের ছবি দেওয়ার ব্যবস্থা করছে
সোশাল মিডিয়ার ওপর নজর রাখবে নির্বাচন কমিশন
• সব প্রার্থীদের তাঁদের সোশাল মিডিয়া চ্যানেলগুলি সার্টিফাই করিয়ে নিতে হবে।
• নির্বাচনী আচরণবিধির আওতায় সোশাল মিডিয়া পোস্টও পড়বে
• প্রত্যেক প্রার্থীকে তাঁদের সোশাল মিডিয়া সংক্রান্ত খরচ তাঁদের নির্বাচনী খরচের মধ্যে দেখাতে হবে
• গুগুল আর ফেসবুকের রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন সার্টিফাই করার ব্যবস্থা আছে
• নির্বাচন কমিশন একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ CVigil চালু করেছে। এর সাহায্যে যে কেউ (নাম প্রকাশ না করেও) যে কোনও ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ নির্বাচনী ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে কমিশনকে জানাতে পারবে। অভিযোগ দায়ের করার ১০০ মিনিটের মধ্যে তা কমিশনের ভ্রাম্যমান দলের কাছে পৌঁছে যাবে। কর্ণাটকে ২০১৮’র বিধানসভা নির্বাচনে ওই অ্যাপ পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়।
অপরাধ ও ইলেকশন
• অক্টোবর ১০, ২০১৮’য় নির্বাচন কমিশন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে বলা হয় যে, সব পার্টির ক্যান্ডিডেটদের কোনও “পূর্ববর্তী অপরাধ” থাকলে তা ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা উচিত। এবং টেলিভিশন ও সংবাদপত্রেও তিনবার তার ঘোষণা থাকা দরকার।
• পূর্ববর্তী ২০১৪ এর লোকসভা নির্বাচনে ১২০০ কোটি টাকা মূল্যের ড্রাগ, ক্যাশ ও বেআইনি মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
• ডিসেম্বর, ২০১৮ তে পাঁচটি রাজ্যে(মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, মিজোরাম ও তেলেঙ্গানা) বিধানসভা নির্বাচনে ২৯৬ কোটি টাকার ড্রাগ, মদ ও ক্যাশ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল