প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন সরকারের সম্প্রতি সম্প্রসারিত মন্ত্রীসভার ৭৮ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৩৩ জন (বা ৪২%) জানিয়েছেন যে, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা (Criminal Cases) চলছে এবং ৭০ জন মন্ত্রী (প্রায় ৯০%) হলেন কোটিপতি বা যাঁদের ঘোষিত সম্পত্তি ১ কোটি টাকার বেশি। অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (ADR) এই তথ্য দিয়েছে।
৩৩ জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে ফৌজদারি মামলা চলছে, তার মধ্যে ২৪টি মামলা হলো গুরুতর অপরাধ সংক্রান্ত।
বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া হলেন মন্ত্রীসভার সবচেয়ে ধনী সদস্য। তাঁর সম্পত্তির মূল্য ৩৭৯ কোটি টাকা। এর পরেই আছেন বানিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযুষ গয়াল। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৯৫ কোটি টাকা। গয়াল এখন বস্ত্রশিল্প মন্ত্রীও হয়েছেন।
৭ জুলাই, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর মন্ত্রীসভার সম্প্রসারণ ও রদবদল ঘটান। তাতে আইন, তথ্য ও সম্প্রচার এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকে পরিবর্তন আনা হয়। মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা আগের ৫৪ থেকে বাড়িয়ে ৭৮ করা হয়। ২০১৯-এ বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর এটাই ছিল মন্ত্রিসভার প্রথম ও বড় ধরনের রদবদল।
সম্পত্তি ও অপরাধের নিরিখে মন্ত্রিসভার চেহারাটি এই রকম:
অপরাধ সংক্রান্ত রিপোর্ট
৭৮ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ২৪টি মামলা গুরুতর অপরাধ সংক্রান্ত।
এডিআর-এর বিচারে গুরুতর অপরাধ হল এই রকম:
- যেগুলিতে সাজার মেয়াদ ৫ বছর বা তার বেশি বা যেগুলি জামিন অযোগ্য
- নির্বাচন সংক্রান্ত অপরাধ (যেমন, ঘুষ দেওয়া)
- মারধোর, খুন, অপহরণ বা ধর্ষণ
- জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এ তালিকাভুক্ত অপরাধ
- দুর্নীতি নিরোধক আইনের আওতাভুক্ত দুর্নীতি
- মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ
- তহবিল তছরুপ সংক্রান্ত অপরাধ
মামলার তালিকা নীচে দেওয়া হল।
নিশিথ প্রামাণিক জানিয়েছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ নম্বর ধারায়) খুনের মামলা রয়েছে।
জন বারলা, নিশীথ প্রামাণিক, পঙ্কজ চৌধুরি ও ভি মুরলিধরন – এই চারজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ নম্বর ধারায়) খুনের চেষ্টার মামলা রয়েছে।
অমিত শাহ, গিরিরাজ সিংহ, শোভা করন্দলাজে, নিত্যানন্দ রাই ও প্রহ্লাদ যোশি – এই পাঁচ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে (ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ বা ২৯৫এ ধারায়) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার মামলা রয়েছে।
সাতজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে (ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭১এইচ, ১৭১ই, ১৭১এফ ধারা অনুযায়ী) নির্বাচনী আইন ভাঙ্গার অভিযোগে মামলা চলছে। এই সাত মন্ত্রী হলেন নীতিন গড়করি, সত্যপাল সিংহ বাঘেল, গিরিরাজ সিংহ, পঙ্কজ চৌধুরি, অশ্বিনী কুমার চৌবে, ভাগওয়ান্থ খুবা ও কৌশল কিশোর।
আরও পড়ুন: ভুয়ো জনমত সমীক্ষায় দাবি রাহুল গাঁধী বিশ্বের তৃতীয় বিশ্বাসযোগ্য নেতা
যখন টাকা কথা বলে
মন্ত্রিসভায় যোগদানকারী মন্ত্রীদের ৯০% হলেন কোটিপতি। মন্ত্রিসভার সদস্যদের গড় সম্পত্তির মূল্য হল ১৬.৫৪ কোটি টাকা।
সম্পত্তির বিচারে প্রথম ৫ মন্ত্রী।
শিক্ষাগত রিপোর্ট কার্ড
৭৮ জন মন্ত্রীর মধ্যে, ১৭ জন হলেন স্নাতক, ১৭ জন স্নাতক-পেশাদার (ডাক্তার, আইনজীবী, হিসাবরক্ষক) ও ২১ জন হলেন স্নাতক-উত্তর ডিগ্রিধারী।
পুরো রিপোর্টটি নীচে দেখুন।
এডিআর-এর প্রকাশিত রিপোর্টটি এখানে দেখুন।
আরও পড়ুন: ভুয়ো দাবি: নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদক মোদীর বিদেশনীতির প্রশংসা করলেন