ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (অবসরপ্রাপ্ত) গুঞ্জন সাক্সেনার জীবন নিয়ে তৈরি ছবি, গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য কার্গিল গার্ল নেটফ্লিক্সে সদ্য মুক্তি পেয়েছে। অনেকেই ছবিটিতে সঠিক তথ্য তুলে ধরা হয়নি বলে দাবি করেছেন এবং তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ছবিটিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধক্ষেত্রে প্রথম মহিলা অফিসারের জীবনের সত্যি ঘটনা দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে দাবি করা হয়েছে। লিঙ্গবৈষম্য সহ বিভিন্ন প্রশ্নেই ছবিটিতে বাস্তবের যথাযথ প্রতিফলন ঘটেনি বলে দাবি করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন।
গুঞ্জন সাক্সেনার সহকর্মী ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (অবসরপ্রাপ্ত) শ্রীবিদ্যা রাজনও ছবিটিকে ভুল তথ্যে ভরা এবং পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করেছেন।
গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য কার্গিল গার্ল ছবিটির বিষয়বস্তু
গুঞ্জন সাক্সেনা ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রথম মহিলা অফিসার যিনি হেলিকপ্টার চালিয়েছেন এবং ১৯৯৯ সালে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে কার্গিল যুদ্ধের সময় মৃতদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেছিলেন। এই ছবিটিতে তাঁর জীবনের এই সব ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। এই ছবিতে আরও দেখানো হয়েছে যে সাক্সেনা ছিলেন প্রথম মহিলা যাঁকে উধমপুর এয়ার বেসে পোস্টিং দেওয়া হয়। সেখানে তিনি কী ভাবে তাঁর ইউনিটের সহকর্মী ও তাঁদের কমান্ডিং অফিসারের কাছে লিঙ্গবৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে অন্যায্য ব্যবহার করা হয়েছিল, তাও এই সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছে। সাক্সেনার জন্য মহিলাদের জন্য পৃথক শৌচালয় দেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। ছবিটিতে দেখানো হয়েছে কী ভাবে এয়ারফোর্স বেসে পুরুষ অফিসারদের বৈষম্যমূলক ব্যবহারের জন্য সাক্সেনা বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেওয়ার সুযোগ হারিয়েছেন। নিজের শক্তি প্রমাণ করার জন্য গুঞ্জনকে তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে পাঞ্জা লড়তেও হয়েছে। লোক সরিয়ে নেওয়ার একটি অপারেশনের সময় যখন তাঁর কম্যান্ডিং অফিসারের হেলিকপ্টারে গুলি করা হয়, তখন গুঞ্জন তাঁকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচান।
তথ্য যাচাই করে বিপরীত এবং মজার তথ্য উঠে এসেছে। সংজ্ঞা অনুসারে বায়োপিক হল কোনও বাস্তব জীবনের উপর তৈরি সিনেমা। অনেক সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছবি নির্মাতা এবং প্রযোজকরা জীবনীভিত্তিক ছবি করেন এবং দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য তাকে খানিকটা নাটকীয় রূপ দেন।
সত্যিই কি গুঞ্জন সাক্সেনা যুদ্ধে উড়ান নিয়ে যাওয়া প্রথম মহিলা অফিসার?
এটাই আসল প্রশ্ন, কারণ এই প্রশ্নটিই এই সিনেমার প্রধান বিষবস্তু। আর এটা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কম্যান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) অনুপমা জোশী ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রথম মহিলা অফিসারদের মধ্যে একজন। বিমানবাহিনীর বিভিন্ন নিয়ম এবং আচরণবিধি জানার জন্য এই ছবি বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হয়। তিনি বুমকে জানান, "আর্মি, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীসহ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে আমরা প্রথম মহিলা দল হিসাবে ১৯৯২ সালে যোগ দিই এবং আমদের গ্রাউন্ড ডিউটি দেওয়া হয়। মেয়েরা কতটা বাহিনীর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে এবং ছেলেরাও কী ভাবে মেয়েদের গ্রহণ করে, বিমানবাহিনী তা দেখতে চেয়েছিল। উড়ান নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়ে প্রথম মহিলা দল আসে ১৯৯৪ সালে।"
আরও পড়ুন: ৩৮ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা 'পিএম কেয়ার্স'-এ ২,১০৫ কোটি টাকা দিয়েছে
কিন্তু এটাও সত্যি যে শ্রীবিদ্যা রাজন এবং গুঞ্জন সাক্সেনা ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রথম মহিলা অফিসার যাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রে উড়ান নিয়ে যান। শ্রীনগর থেকে তাঁরা চিতা নামক হেলিকপ্টার উড়িয়ে যোগাযোগ করা, রসদ জোগানো ও উদ্ধার কার্য চালান। রাজন এবং সাক্সেনা ১৯৯৪ সালে নেওয়া চতুর্থ দলের সদস্য ছিলেন। তাঁদের দলে চার জন মহিলা বিমান চালক ছিলেন। তাঁদের পোস্টিং উধমপুর এয়ার বেসে ছিল এবং তাঁদের
বেশি উচ্চতায় উড়ান নিয়ে যাওয়ার প্রশিক্ষণ ছিল, তাই তাঁরা যুদ্ধে যেতে পেরেছিলেন।
রাজন দাবি করেছেন যে তিনিই ছিলেন প্রথম মহিলা অফিসার যিনি কার্গিলে উড়ান নিয়ে যান। ভারতীয় বায়ুসেনা তাঁর এই বক্তব্য অস্বীকার করেনি। বুম বায়ুসেনার সংরক্ষিত নথির সঙ্গে মিলিয়ে দেখার জন্য মুখপাত্র ইন্দ্রনীল নন্দীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে আমরা তাঁর কাছ থেকে এখনও কোনও উত্তর পাইনি। আমরা ভারতীয় বিমানবাহিনীর কাছ থেকে সঠিক তথ্য পেলে তা এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানিয়ে দেব।
কে এই ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (অবসরপ্রাপ্ত) শ্রীবিদ্যা রাজন?
ওই সময় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (অবসরপ্রাপ্ত) শ্রীবিদ্যা রাজন ছিলেন গুঞ্জনের সহকর্মী। সিনোমাটিতে প্রথম মহিলা অফিসার হিসাবে যে ভাবে গুঞ্জনকে দেখানো হয়েছে, তাতে তিনি জনসমক্ষে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
রাজন বুমকে জানিয়েছেন, "গুঞ্জন এবং আমি সহকর্মী ছিলাম। আমাদের কোর্সে ছয় জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং আমরা ১৯৯৬ সালে পাইলট অফিসার হিসাবে নিযুক্ত হই। আমরা হিলা পাইলটের চতুর্থ কোর্স এবং মহিলা হেলিকপ্টার পাইলটের দ্বিতীয় কোর্সের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। গুঞ্জন ও আমার পোস্টিং ছিল উধমপুর বেসে। আমরা জম্মু-কাশ্মীর ও হিমাচলপ্রদেশের বেশি উচ্চতার অঞ্চলে উড়ান নিয়ে গিয়েছি। যখন কার্গিল যুদ্ধ শুরু হল আমরা তখন অভিজ্ঞ পাইলট এবং আমাদের শ্রীনগরে পাঠানো হয়। আমি প্রথম সেটের সদস্য ছিলাম এবং গুঞ্জন ছিল পরিবর্ত দলের সদস্য। স্বাভাবিক ভাবেই কার্গিল সেক্টরে কাজ করার ক্ষেত্রে আমিই ছিলাম প্রথম মহিলা। তবে ছবিটিতে দেখানো হয়েছে একজন মাত্র মহিলা বিমান চালককে উধমপুর বেসে পাঠানো হয়।
১৯৯৯ সালে এনডিটিভি'র সাংবাদিক বিষ্ণু সোম একটি সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করেন যাতে গুঞ্জন সাক্সেনা এবং শ্রীবিদ্যা, দুজনকেই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশগ্রহণকারী প্রথম মহিলা পাইলট হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সঙ্গে সাক্সেনার একটি বাইটও ছিল। সিনেমাটি এই প্রতিবেদনটি থেকেই অনুপ্রাণিত বলে মনে করা হচ্ছে। সংবাদ প্রতিবেদনটি যেহেতু বায়ুসেনার বিমানঘাঁটিতে তোলা হয়েছিল, তাই অনুমান করা হচ্ছে যে হয়তো সেনাবাহিনীর তরফ থেকেই গুঞ্জন সাক্সেনা ও শ্রীবিদ্যা রাজনকে সংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত করা হয়েছিল।
যে কম্যান্ডিং অফিসার গুঞ্জনের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছিলেন, গুঞ্জন কি সত্যিই তাঁর প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন?
ছবিটিতে দেখানো হয়েছে যে এক কম্যান্ডিং অফিসারের লিঙ্গবিদ্বেষী আচরণের শিকার হয়েছেন গুঞ্জন সাক্সেনা। এই কম্যান্ডিং অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ভিনীত সিং। কার্গিল যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর হেলিকপ্টারে গুলি করা হলে গুঞ্জন তাঁকে বাঁচান। যোশী এই ঘটনাটিকে অস্বীকার করেছেন এবং জানিয়েছেন যুদ্ধের সময় এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মহিলাদের জন্য পোশাক বদলানোর আলাদা ঘর বা আলাদা শৌচালয় কি সত্যি ছিল না?
ছবিটিতে দেখানো হয়েছে আলাদা পোশাক বদলানোর ঘর না থাকায় কী ভাবে সাক্সেনা সমস্যায় পড়েছেন। দেখানো হয়েছে যে তিনি সময় মতো তাঁর ফ্লাইং সুট পরতে না পারায় অনেক অপারেশনে দেরিতে পৌঁছেছেন।
ভারতীয় বায়ুসেনার মুখপাত্র ইন্দ্রনীল নন্দী জানিয়েছেন, "মহিলারা কাজে যোগ দেওয়ার আগে তাঁদের প্রয়োজনীয় সমস্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়। তবে নতুন ব্যবস্থা তৈরি করা বা পুরানো পরিকাঠামোর রদবদল করতে হয়তো কিছুটা সময় লেগেছে। যেখানে নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি, সেখানে কিন্তু পর্যাপ্ত বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে মহিলা অফিসাররা এসে পৌঁছানোর আগেই।"
রাজন বুমকে জানান, "কাউকে যখন কোনও কর্মরত ইউনিটে নিয়োগ করা হয়, তখন সব সময় সব সুবিধা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায় না। প্রথম কিছু সপ্তাহ আমরা আমাদের ট্রেনং ইউনিটের লাগোয়া অন্য একটি বাড়ীর শৌচালয় ব্যবহার করতাম। ওই বাড়িতে একজন মহিলা মেডিক্যাল অফিসার থাকতেন। পরে আমাদের জন্য সব ব্যবস্থা করা হয়। পাইলট বলে ফ্লাইট ট্রেনিং-এর জন্য আমাদের ইউনিফর্ম পরে রিপোর্ট করতে হত এবং পরে আমরা ওভারঅল পরতাম। প্রথম দিকে আমরা ব্রিফিং রুমটাকেই রকমফের করে পোশাক বদলানোর ঘর হিসাবে ব্যবহার করতাম। পরে আমদের পুরুষ সহকর্মীরা লকারের স্থানে কিছুটা জায়গা বের করে আমাদের জিনিসপত্র রাখা এবং পোশাক বদলানোর জন্য ব্যবস্থা করে দেন। এই সব সামান্য কারণে আমাদের উড়ান কখনো বাতিল হয়ে যায়নি। পাইলটের সংখ্যা কম থাকায় বিমানবাহিনী কারোর উড়ান বাতিল করতে পারত না।" উইং কম্যান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) অনুপমা জোশী বলেন, "অফিসারদের জন্য শৌচালয় ছিল। বেসগুলিতে হিসাবরক্ষকের মতো কাজ করার জন্য সিভিলিয়ান মহিলা কর্মী ছিলেন। তাঁদের শৌচাগারও আমরা ব্যবহার করতাম। যখন তুমি তোমার দেশকে রক্ষা করার কাজ করছ, তখন শৌচালয় না থাকাটা বড় কোনও ব্যাপার নয়। আমার প্রথম পোস্টিং-এর সময় সত্যিই কোনও মহিলা সহকর্মী ছিল না, কিন্তু আমরা মানিয়ে নিতাম।"
ভারতীয় বিমান বাহিনী কি সত্যিই লিঙ্গবিদ্বষী?
ছবিটার বেশির ভাগ অংশ জুড়ে লিঙ্গবিদ্বেষ এবং নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ দেখানো হয়েছে। যদিও শেষের দিকে গিয়ে এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে, কিন্তু ছবিটির প্রথম অংশ মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়।
উইং কম্যান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) অনুপমা জোশী মহিলাদের স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে আদালতেও নিয়ে গিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে দিল্লি হাইকোর্টে এই কেস ফাইল করা হয় এবং প্রায় আট বছর পর মহিলাদের স্থায়ী নিয়োগের দাবি পূরণ হয় (উড়ানের ক্ষেত্র ছাড়া)। প্রতিরক্ষা বাহিনীর ব্যবস্থা এবং নীতি বদলাতে হয় বলে এত সময় লাগে।
জোশী নিজের বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, "আমি আদালতে যা নিয়ে লড়াই করি এবং সিনেমাতে যা দেখানো হয়, তা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। আমার বস আদালতে আমার আর্জিকে সমর্থন করেন, এবং বলেন যে অনুপমা ভারতীয় বায়ুসেনার সম্পদবিশেষ। পুরুষ অফিসাররা আমাকে সমানেই সাহস দিয়ে গেছেন। ঘটনাক্রমে ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ মহিলা অফিসার সশস্ত্র বাহিনীর অফিসারদের বিয়ে করেন। তা থেকে বোঝা যায় সব পুরুষ নারীবিদ্বষী নন। ছবিতে যেমন দেখানো হয়েছে যে মহিলা অফিসাররা পুরো স্কোয়াড্রন ভর্তি খারাপ লোকের সম্মুখীন হন, তা আসলে সত্যি নয়।"
রাজন জানান, "ভারতীয় বায়ুসেনা আমাদের সমান সুযোগ এবং প্রশিক্ষণ দেয়। স্টেশনে (উধমপুর) কিছু লোক আমদের সমর্থন করতেন এবং তাঁরা আমাদের সাহায্যও করতেন। চব্বিশ বছর আগে আমরা এই পুরুষশাসিত ঝুঁকিবহুল অঞ্চলে প্রথম মহিলা পাইলট হিসাবে উড়ানের কাজ করি। অনেকেই এই জায়গাটা মহিলাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাননি। আমরা কোনও ভুল করলে সকলের সামনেই তা সংশোধন করে দেওয়া হত এবং আমাদের ক্ষেত্রে নজরদারিও বেশি কঠিন হত। আমদের প্রশিক্ষণ পেতে এবং এই যোগ্যতা অর্জন করতে প্রচুর প্ররিশ্রম করতে হত। কিন্তু একটি সংস্থা হিসাবে বায়ুসেনা আমাদের সমান সুযোগ দিত।"
ছবিটির বিরুদ্ধে যেহেতু প্রাক্তন সেনাকর্মীদের বেশির ভাগের অসন্তোষের মূল কারণ হল ছবিতে দেখানো লিঙ্গবৈষম্য, তাই এই বিষয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার জানা জরুরি। ছবির চিত্রনাট্য ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল এবং ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে দেখানো হয়েছিল। উইং কম্যান্ডার নন্দী জানান, "যে ভাবে ছবিতে লিঙ্গবৈষম্য দেখানো হয়েছে, সে বিষয়ে আমাদের কিছু বক্তব্য ছিল এবং আমরা নির্মাতাদের সামান্য কিছু পরিবর্তন করতে অনুরোধ করি, যা করা হয়নি। আমদের মনে হয়েছে যে ছবিতে লিঙ্গবৈষম্য এমন ভাবে দেখানো হয়েছে যেন এই ব্যাপারটা ভারতীয় বিমানবাহিনীর কাজ করার পদ্ধতির মধ্যেই রয়েছে। যে ভাবে এই সংস্থার কাজ করার পরিবেশ এবং পদ্ধতি দেখানো হয়েছে, তা একেবারেই ঠিক নয়। এখানকার কাজের পরিবেশ লিঙ্গবৈষম্যহীন এবং একেবারেই মেধার ভিত্তিতে চলে।"
ফ্লাইট লেফট্যেনেন্ট (অবসরপ্রাপ্ত) গুঞ্জন সাক্সেনা এই বিষয়ে কি বলছেন?
সাক্সেনার সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি তাঁর বক্তব্য এনডিটিভির একটি ব্লগের মাধ্যমে জানিয়ে দেন।। সেখানে তিনি জানান যে যুদ্ধক্ষেত্রে উড়ান নিয়ে যাওয়া প্রথম মহিলা অফিসার তিনিই, এবং ভারতীয় বায়ুসেনার নথি থেকেই তা প্রমাণ করা সম্ভব। তিনি বিমানবাহিনীর মধ্যে লিঙ্গবৈষমর বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং জানান সে সময় ভারতীয় বায়ুসেনা তাঁকে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে দিয়েছিল।
ছবিটির নির্মাতা এবং নির্দেশক কি বলছেন?
এই ছবিটি ঘিরে যে বিতর্ক চলছে, ছবিটির নির্মাতা ধর্মা প্রোডাকশন, জি স্টুডিও এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্স সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করে। তবে এই সমালোচনা ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর নজরে এসেছে। এর আগে প্রায় দু'দশক ধরে সংবাদমাধ্যমে, বিভিন্ন প্রতিবেদনে সাক্সেনাকে কার্গিল গার্ল বলেই অভিহিত করা হয়েছ্ব।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে স্বাস্থ্য নিয়ে ভুয়ো খবরে কয়েকশো কোটি বার 'ভিউস': রিপোর্ট