২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) ভোট-কুশলী সংস্থা হিসাবে কাজ করা ইন্ডিয়ান পলিটিকাল অ্যাকশন কমিটি বা আই-প্যাক (I-PAC) জানিয়েছে নন্দীগ্রামে ভারতীয় জনতা দলের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী জিততে চলেছেন বলে যে গোপন সমীক্ষা (Fake Survey) রিপোর্ট ফাঁস হওয়ার কথা ভাইরাল স্ক্রিনশট মারফত প্রচার করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো।
এ বছরের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনে নন্দীগ্রামের লড়াইকেই সবচেয়ে রাজকীয় লড়াই আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যেখানে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাঁরই দলের শিবির বদল করা নেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পেয়ে বামফ্রন্ট সরকারের পতন ঘটাতে নির্ণায়ক ভূমিকা নিয়েছিল নন্দীগ্রাম।
বৃহঃস্পতিবার যে আসনগুলির নির্বাচনে বিজেপি ২৩টি এবং তৃণমূল কংগ্রেস ৫টি আসন পাবে বলে সমীক্ষার স্ক্রিনশট ছাড়ান হয়েছে, আই-প্যাক-এর যাচাই করা টুইটার হ্যান্ডেল তাকে ভুয়ো আখ্যা দিয়েছে।
স্ক্রিনশটটি দেখে মনে হয়, এটি আই-প্যাক-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত কিশোরকে (Prashant Kishore) লেখা একটি চিঠির কম্পিউটার স্ক্রিনের ছবি। তাতে ১ এপ্রিল হতে চলা দ্বিতীয় দফার ভোটকেন্দ্রগুলির সমীক্ষার সারাংশ রয়েছে।
ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটটিতে নন্দীগ্রামের কথা এবং তার সম্ভাব্য জয়ী হিসাবে বিজেপির কথা তুলে ধরা হয়েছে।
আই-প্যাক স্ক্রিনশটটি টুইট করে লিখেছে, "নিশ্চিত নির্বাচনী বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে বিজেপি তার কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করতে এ ধরনের ভুয়ো সমীক্ষার ছলনার আশ্রয় নিচ্ছে ।"
দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪টি জেলা বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা-এর ৩০টি আসনে ভোটগ্রহণ হতে চলেছে ১ এপ্রিল।
চিঠির নীচে আই-প্যাক-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক জৈন-এর স্বাক্ষর দেওয়া আছে। জৈন নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর জয় সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর সমীক্ষাকে সম্পূর্ণ ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। আই-প্যাকের একজন পদস্থ রাজনৈতিক ভাষ্যকারও এই সমীক্ষা নস্যাৎ করে দিয়েছেন। জৈন এ কথাও জানান যে, এমনকী তাঁর নামের বানানটাও ভুল লেখা হয়েছে।
নন্দীগ্রামের বর্তমান পরিস্থিতির দ্যোতক বলে চালানো অন্য একটি সার্কুলারও আই-প্যাক-এর লেটারহেডে ছড়ানো হয়েছে, যাতে কোন প্রার্থী কত শতাংশ ভোট পাবেন, তার আভাস দেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারী ওই সমীক্ষায় ৫২ শতাংশ ভোট পাচ্ছেন আর মমতা ব্যানার্জি ৪২শতাংশ। এর কারণ হিসাবে ভোটারদের বেশি সংখ্যায় ভোট দিতে আসা এবং তাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের কথাও বলা হয়েছে।
এই স্ক্রিনশট এবং সার্কুলার, দুই-ই ফেসবুক ও টুইটারে ভাইরাল হয়েছে।