হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন চলে গেলেন কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনা। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে আগে মাথায় রক্ত জামাট বাঁধলে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ১১ নভেম্বর ছেড়ে দেওয়া হয় মারাদোনাকে। বুয়েনোস আইরেসে নিজের বাসভবনে মারাদোনা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি আলবার্টো ফার্নান্ডেজ তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন।
১৯৮৬ সালে মেক্সিকোতে তাঁর ক্যাপটেনশিপে বিশ্বকাপ জেতার জন্য সর্বকালের সেরা অন্যতম ফুটবল তাড়কা হিসেবে ধরা হয় মারাদোনাকে। স্থানীয় ক্লাব অর্জেন্টিনা জুনিয়রে যোগ দেওয়ার পর মরাদোনা যোগ দেন বোকা জুনিয়রে। ১৯৮২ সালে বার্সেলোনাতে যোগ দেওয়ার আগেই তারকার তকমা জোটে তাঁর কপালে।
নাপোলি ক্লাবে যোগ দেওয়ার আগে ২ বছর কাটান নৌ ক্যাম্পে। পরবর্তী সাত বারের মরশুমে খেলে শতগোল ঢোকে মারাদোনার ঝুলিতে।
আরও পড়ুন: না, এটি স্থুল দিয়েগো মারাদোনার টেনিস বলে লাথি মারার ভিডিও নয়
আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের টুইটার অ্যাকাউন্ট বুধবার খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে ফুটবলের ঈশ্বর পুত্রকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
আরেক কিংবদন্তি ও প্রতিপক্ষ পেলে তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া জানাতে লেখেন, "কী গভীর দুঃখের খবর। আমি হারালাম একজন মহান বন্ধুকে আর পৃথিবী হারাল এক কিংবদন্তিকে। আরও অনেক কিছু বলার আছে আপাতত ঈশ্বর শক্তি দিন পরিবারের সদস্যদের। আশা করি একদিন এক সঙ্গে আমরা আকাশে বল খেলতে পারব।"
ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ও বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টুইট করে স্মৃতিচারণ করেন। তিনি লেখেন, "আমার নায়ক আর নেই, আমার জ্ঞানপাগলা শান্তিতে। আমি ফুটবল দেখেছিলাম শুধু তোমার জন্য।"
মারদোনা কলকাতায় আসেন দু'বার। ২০০৮ এবং ২০১৭ সালে। শেষ বারের কলকাতা সফরে নেতাজি বিমানবন্দর মুখরিত হয়ে ওঠে "দিয়েগো, দিয়েগো" অনুরাগীদের ধ্বনিতে। সৌরভের সঙ্গে বিশেষ সেবামূলক ফুটবল ম্যাচে অংশগ্রহন করেন তিনি।
মারাদোনার বর্ণময় জীবন উত্থান পতনে ঘেরা। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে 'ডোপিং' করতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। ১৫ মাসের জন্য অবসরে যেতে হয় তাঁকে। ১৯৯৭ সালে তিনি ফুটবলের ময়দান থেকে অবসর নেন। ২০০০ সালে তীব্র মাদকাসক্ত হয়ে হার্ট অ্যাটাকে প্রায় মরতে বসেছিলেন তিনি।
২০১৮ সালে আবার ফিরে আসেন ক্রীড়াঙ্গনে। আর্জেন্টিনা দলের কোচ হিসেবে যোগ দেন তিনি।
কোলকাতা পুলিশের তরফেও "রাজা দীর্ঘদিন বাঁচো" আকাঙ্খা করে টুইট করা হয়েছে মারাদোনার বিশ্বকাপ হাতে সুবর্ণ মুহূর্তের ছবি।
এর আগে ২০০৫ সালে ওজন কমানোর অস্ত্রোপচার ও ২০১৭ সালে অ্যালকোহল জনিত হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ২০১০ সালে মারাদোনার পোষ্য শারমেয় তাঁর ঠোঁট কামড়ে ধরলে মাঝরাতে তা পুর্নস্থাপন করতে হাসপাতালে দৌড়াতে হয়।
আরও পড়ুন: প্রসঙ্গ: ত্রিপুরায় ব্রু-রিয়াং শরণার্থী পুনর্বাসন নিয়ে হিংসার ঘটনা