ভাতিন্ডার ধর্না প্রদর্শনকারী (protestor) এক ব্যক্তির মৃতদেহের (dead body) পুরনো ছবি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে সেটি দিল্লি সীমান্তে (Delhi border) লাগাতার চলা কৃষক আন্দোলনের (farmers protest) সঙ্গে সম্পর্কিত।
বুম দেখে রাস্তায় মৃত অবস্থায় পরে থাকা ওই ব্যক্তির নাম জগিন্দর সিংহ, তিনি পাঞ্জাবের সাংগ্রুর জেলার বাসিন্দা। ধর্না প্রদর্শনকালীন তাঁর মৃতদেহের পাশে আত্মহনন করার কারণ সহ প্ল্যাকার্ড উদ্ধার হয়।
স্ক্রোলে ১৬ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী কৃষক সংগঠনগুলির দাবি ৭০ জন কৃষক মারা গেছেন কৃষি আন্দোলন চলার সময়। গত তিনমাস ধরে কেন্দ্রের পাশ করা তিনটি কৃষি আইন নিয়ে সিংঘু, গাজিপুর, টিকরি সীমান্ত এলাকায় অন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের একাংশ। শনিবার ৬ জানুয়ারি দেশব্যাপী "চাকা জ্যাম"-এর ডাক দিয়েছে ৪০ টি কৃষক সংগঠন নিয়ে তৈরি হওয়া সংযুক্ত কিসান মোর্চা।
ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা যায় রাস্তার উপর নীল পাগড়ি পরা এক ব্যক্তির মৃতদেহ রাস্তায় লুটিয়ে রয়েছে।
ছবিটি ফেসবুক পোস্টে ব্যবহার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''আমাদের দেশের কৃষক - আহত, অসুস্থ্য এবং নরেন্দ্র মোদী সরকারের তৈরি #নয়া_কৃষি আইন দ্বারা অত্যাচারিত।''
ছবিটি হিন্দি ক্যাপশন সহ ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছে। পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "আজ আরও একজন কৃষক আন্দোলনে শহিদ হয়েছে। শহিদ কৃষককে শত শত প্রণাম। জিতবে কৃষক হারবে অহঙ্কার।"
(মূল হিন্দিতে টুইট: आज एक और किसान आंदोलन में शहीद हो गया। शहीद किसान को सत सत नमन। जीतेगा किसान हारेगा अभिमान)
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তৃণমূল কংগ্রেস অনুগামী একটি টুইটার প্রোফাইল থেকে করা টুইটে অন্যান্য ছবির সঙ্গে এই ছবিটিও ব্যবহার করা হয়েছে। ওই টুইটে লেখা হয়েছে, ''ভারতবর্ষের কৃষকরা এখন বিজেপি সরকার কর্তৃক ৩টি কৃষকবিরোধী কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দীর্ঘ ১২০ দিনেরও বেশি সময় ধরে কঠিন শীত ও ভারী বৃষ্টিপাতের মধ্যে আন্দোলন করে চলেছেন এর ফলে ৮৩ জনেরও বেশি কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন। @BJP4India সরকার তাদের এই সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ #KrishokBirodhiBJP''
টুইটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীর হেফাজতে আউং সান সু চি কাঁদছেন বলে পুরনো ছবি ভাইরাল
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটিকে রিভার্স সার্চ করে রোজানা সমাচারে ২ জুলাই ২০২১ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ভাইরাল ছবিটিকে খুঁজে পায়। পাঞ্জাবি ভাষায় প্রকাশিত শিরোনামটি সার্চ করলে পাঞ্জাব কেশরীতে ২০২০ সালের ১ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখা যায়। ওই প্রতিবেদনেও অন্যদিক থেকে তোলা রাস্তায় পড়ে থাকা বৃদ্ধটির ছবি দেখা যায়।
বুম গুগলে আরও কিওয়ার্ড সার্চ করে ২ জুলাই ২০২১ প্রকাশিত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায়। ওই প্রতিবেদনে মৃত ব্যক্তির পরিচয় হিসবে বলা হয়, ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম জগিন্দর সিংহ, তিনি পাঞ্জাবের সাংগ্রুর জেলার বাসিন্দা। ভাতিন্ডার গুরু নানক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে জমি দিতে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি ধর্না প্রদর্শনকালীন আত্মহনন করেন। রাস্তায় তাঁর মৃতদেহের পাশে কৃষক সংগঠন ভারতী কিসান ইউনিয়ন (উগ্রাহন) (Bharti Kisan Union-Ugrahan)-এর এর পতাকা পাওয়া যায়। তার পাশেই আত্মহননের কারণ লেখা প্ল্যাকার্ডও উদ্ধার হয়।
কৃষক সংগঠনগুলি জগিন্দরের মৃত্যুর পর আন্দোলন শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ও তাঁর পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ পুনরায় শুরু করার দাবি জানান তাঁরা।
পাঞ্জাব কেশরীর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ জমায় ভাতিন্ডায় শ্রী গুরু নানক দেব তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের নির্দেশ দেয় পাঞ্জাব সরকার।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডের এর স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনভাইরাসের টিকা নিতে ভয় পাচ্ছেন?