সোশাল মিডিয়ায় করোনাভাইরাস (Coronavirus) নিয়ে ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রকের (Health Italy) নাম করে একটি ভুয়ো ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্বের (conspiracy theory) বার্তা ছড়ানো হচ্ছে। ফেসবুক ও হয়াটসঅ্যাপেও ভাইরাল হয়েছে এই দীর্ঘ (message) বার্তাটি।
ওই ভুয়ো বার্তার সারমর্ম হল, ইতালির চিকিৎসকরা করোনার গ্রাসে মৃত এক রোগীর ময়নাতদন্ত করে জানতে পেরেছে, করোনা আসলে, "এমপ্লিফায়েড গ্লোবাল 5 জি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন (পয়জন)'।... এটি কোনও ভাইরাস নয়, তবে একটি জীবাণু যা মৃত্যুর কারণ করে, যা শিরাতে রক্ত জমাট বাঁধার কারণ, অর্থাৎ এই ব্যাকটিরিয়ার কারণে শিরা এবং স্নায়ুতে রক্ত জমাট বাঁধার কারণ এবং এটিই রোগীর মৃত্যুর কারণ ঘটায়।...অ্যাসপিরিন (Asprin-100mg) ও প্যারাসিটেমল ৬৫০ মিলিগ্রাম এবং Apronix জাতীয় ওধুষ খেলেই নিরাময় করা সম্ভব করোনা।..."
ওই বার্তার সূত্র হিসেবে দাবি করা হয়েছে, "ইতালিয়ান স্বাস্থ্য মন্ত্রক।''
ফেসবুকে পোস্টটি দেখা যাবে এখানে।
বুম তার হোয়াসটঅ্যাপ হেল্পলাইন মারফত একই বার্তা পেয়েছে তথ্য-যাচাইয়ের জন্য।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়াল ছত্তীসগঢ়ে সেনার সঙ্গে অমিত শাহের আহারের ছবি
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভাইরাল বার্তাটি আসলে কয়েকটি ভুয়ো খবরের সমষ্টিতে তৈরি ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব। নিচে ভাইরাল বার্তাটির মূল ভ্রান্তিকর তথ্যগুলির তথ্য-যাচাই করা হল।
কোভিড-১৯ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ?
কোভিড-১৯ হয় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে এটি কোনও ব্যাকটেরিয়া নয়।
২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি চিনের বিজ্ঞানীরা নোভেল করোনাভাইরাস উহানের রোগীর দেহ থেকে আলাদা করতে সক্ষম হয়। এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বর অন্যতম স্বাস্থ্য-বিজ্ঞানের জার্নাল দ্যা লেনসেট-এ।
২০১৯ সালের শেষের দিকে চিনের উহান শহরে প্রাদুর্ভাব দেখা যায় এই ভাইরাসের।
৫ জি বিকিরণ নয়
করোনাভাইরাস ছড়ায় সংক্রমিত ব্যক্তির দেহরস, কাশি, সর্দির ফলে ছড়ানো ড্রফলেটের মাধ্যমে। এর সঙ্গে ৫ জি বিকিরণের কোনও যোগ নেই। এটি বহুল প্রচারিত ষড়যন্ত্রমূলক ভুয়ো তত্ত্বের মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবাসাইটেও বিষয়টি খণ্ডন করা হয়েছ।
ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অস্বীকার
ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রক ২০২০ সালেই নস্যাৎ করে পেনকিলার যেমন প্যারাসিটামল ও অ্যাসপিরিন কোভিড সারানো সংক্রান্ত বিষয়টি।
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ভুয়ো-তথ্য খণ্ডন করার জন্য ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রাকের তরফে জানানো হয়, "প্যারাসিটামল ব্যাথা উপশম করে। যা ধুম জ্বরের ক্ষেত্রেও ভীষণ কার্যকরি, কিন্তু করোনাভাইরাস সারায় না।"
এই একই বার্তা ২০২০ সালের জুনমাসে এএফপি খণ্ডন করে। এই সংক্রান্ত তথ্য-যাচাই পড়া যাবে এখানে ও এখানে।
আরও পড়ুন: কোভিড টিকার পর ডেক্লোফেনাক ইঞ্জেকশন নিয়ে তামিলনাড়ুর চিকিৎসকের মৃত্যু?