Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
বিশ্লেষণ

আমরা যেভাবে ফেসবুকে একটি ভুয়ো ফ্লিপকার্ট চক্র খুঁজে পেলাম

বুম ফেসবুকে 'লকডাউন সেল'-নামে অন্তত ১২ টি বিজ্ঞাপনদাতার থেকে পণ্য বিক্রির একাধিক ভুয়ো বিজ্ঞাপনের হদিস পেয়েছে।

By - Mohammed Kudrati | 15 July 2020 5:25 AM GMT

বুমের তদন্তে দেখা গেছে, ফ্লিপকার্টের নামে একাধিক জাল বিজ্ঞাপন অ্যাকাউন্ট ফেসবুক সক্রিয় ছিল। এই জালিয়াতি আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যখন আমরা ফেসবুকের বিজ্ঞাপন লাইব্রেরির তথ্য যাচাই করে দেখি। ওই ভুয়ো বিজ্ঞাপনগুলি ফ্লিপকার্টের নিজস্ব বিজ্ঞাপনের কাঠামোটিকে প্রায় হুবহু নকল করেছে। এবং সেগুলি পৌঁছে যাচ্ছে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের টাইমলাইনে। ফলে, ই-কমার্স বা ইন্টারনেটে যাঁরা কেনাকাটা করেন, তাঁদের মধ্যে অনভিজ্ঞরা এই চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলতে পারেন। বুম ওই ভুয়ো কারবারের পদ্ধতি খুঁটিয়ে দেখে ও প্রমাণ সংগ্রহ করে। দেখা গেছে, এই বিজ্ঞাপনগুলি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য "ফোন" ও অন্যান্য "সরঞ্জামের" ওপর 'লকডাইন সেল'-এর নামে ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ছাড় ঘোষণা করছে। এবং টাকা নেওয়ার জন্য তারা 'ফোনপে' ও অন্যান্য 'ইউনাইটেড পেমেন্ট ইন্টারফেস' (ইউপিআই) চালিত অ্যাপ, এমনকি 'রেজারপে'ও, ব্যবহার করছে।

বুম এমনই একটি ছাড়ের প্রস্তাব বেছে নিয়ে লেনদেন করার কাজে এগোলে, ওই জালিয়াতদের একজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও অ্যাকাউন্টের নাম পেয়ে যায়।
এও জানা যায় যে, এই বিজ্ঞাপনগুলি এবং যে সব বিজ্ঞাপনের পেজ সেগুলি প্রচার করছে, সেগুলি সবই সম্প্রতি তৈরি করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনের লাইব্রেরি থেকে বুম যে সব বিজ্ঞাপন আর বিজ্ঞাপন দাতাদের নাম পেয়েছে, তার বেশিরভাগই জুন মাসের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে আত্মপ্রকাশ করে।
বুম এই ধরনের বিজ্ঞাপন ফেসবুকের টাইমলাইনে দেখতে পায়। মোবাইল ফোন, টেলিভিসন ও অন্যান্য সরঞ্জাম সম্পর্কে ফ্লিপকার্টের অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে খোঁজ করতে গিয়ে বুম ওই বিজ্ঞাপনগুলির হদিস পায়। আপাতদৃষ্টিতে বিজ্ঞাপনগুলিকে ফ্লিপকার্টেরই মনে হবে। কিন্তু কি-ওয়ার্ড 'বিগ বিলিয়ন', 'ফ্লিপ ডিল', ফ্লিপ কার্ট' ও 'ফ্লিপ শপ' দিয়ে সার্চ করলে, আমরা ১২ জন বিজ্ঞাপনদাতার হদিস পাই, যারা ফ্লিপকার্টের ডিজাইন নকল করে ভুয়ো বিজ্ঞাপন দিচ্ছিলেন।
ফেসবুকের পাতায় আমরা ওই ধরনের আরও বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখার সময় সেগুলি আর ছিল না।
কিছু বিজ্ঞাপন ক্রেতাদের ফ্লিপকার্টের অনুকরণে তৈরি সন্দেহজনক ওয়েবসাইটগুলির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দেয়। কিছু বিজ্ঞাপন আবার ক্রেতাদের সরাসরি ভুয়ো ওয়েবসাইটটিতে না নিয়ে গিয়ে প্রথমে একটি ততোধিক মেকি অন্তর্বর্তী ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়। আর কিছু বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে তো কোনও লিঙ্কই স্থাপন করা যায় না।
ফ্লিপকার্ট বুমকে জানায় যে, তারা ওই ধরনের বিজ্ঞাপনগুলিকে ক্রমাগত চিহ্নিত করে চলেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাছাড়া, ক্রেতাদেরও এ ব্যপারে ওয়াকিবহাল করে তোলা হচ্ছে, যাতে তাঁরা কোনও জালিয়াতির শিকার না হন। ফেসবুক বুমকে জানায় যে, জালিয়াতির যে কোনও ঘটনার ক্ষেত্রে তাদের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কিন্তু এই বিজ্ঞাপনগুলি কীভাবে কাজ করে? আর কীভাবেই বা সেগুলিকে চিহ্নিত করা যায়? বুমের তদন্ত কি বলছে?
আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে দেখা যাবে
এই বিজ্ঞাপনগুলি প্রথমে আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে দেখা দেয়। ফ্লিপকার্টের 'থাম্বনেইল' বা ছোট লোগো সমেত ওই বিজ্ঞাপনগুলিকে ফ্লিপকার্টের বিজ্ঞাপন বলেই মনে হবে। সেগুলিতে দীপিকা পাড়ুকোন, অমিতাভ বচ্চন ও আলিয়া ভট্টের মতো ফ্লিপকার্টের সঙ্গে যু্ক্ত তারকাদের ছবিও থাকতে পারে। আর সেই সঙ্গে থাকে অতি লোভনীয় ডিসকাউন্ট। ফ্লিপকার্টের আসল বিজ্ঞাপন থেকে নকলগুলিকে যা আলাদা করে, তা হল আসলগুলিতে থাকে একটি সত্যতা-যাচাই-করা চিহ্ন। এগুলিতে সেটি থাকে না।

ফেসবুকের বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের নীচে থাকে 'অ্যাবাউট দিস কনটেন্ট' বলে একটি অপশান। সেটি ক্লিক করলে ওই কনটেন্ট সম্পর্কে জরুরি তথ্য জানা যায়। একটি ভুয়ো পাতা অবশ্য তাদের বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনটির সঙ্গে ফ্লিপকার্টের যাচাই-করা পাতার সংযোগ ঘটাতে সক্ষম হয়।

কোথায় নিয়ে যায় এটি?

এই ওয়েবসাইটগুলি ফ্লিপকার্টের ওয়েবসাইটের মোবাইল সংস্করণের অনুকরণে তৈরি। তবে ওই মেকি ওয়েবসাইটগুলির একটি সীমাবদ্ধতা হল, সেগুলি বেশি জিনিস প্রদর্শন করতে পারে না। কিছু সীমিত সরঞ্জামই দেখানো হয় সেগুলিতে, যেমন মোবাইল ফোন, বা ল্যাপটপ বা ওয়াশিং মেশিন। সেগুলি ওই ওয়েবসাইটগুলির প্রথম পাতাতেই প্রদর্শিত হয়। আর সেই সঙ্গে থাকে খুব বেশি ডিসকা্উন্টের প্রতিশ্রুতি। সেই তুলনায় ফ্লিপকার্টের আসল ওয়েবসাইটে থাকে সরঞ্জামের এক বিপুল সম্ভার।
এই ভুয়ো ওয়েবসাইটগুলিকে শনাক্ত করার আরও একটি উপায় হল, কম্পিউটারে খুললে সেগুলি কম্পিউটারের মনিটারের সঙ্গে খাপ খায় না। মোবাইল সংস্করণটি বিকৃত আকারে খোলে বড় স্ক্রিনে।
মেকি ওয়েবসাইটগুলির আরও একটি চিহ্ন হল, সেগুলির ইউআরএল-এ 'ফ্লিপকার্ট' শব্দটি থাকে না। বুমের আবিষ্কার করা ওয়েবসাইটগুলির ইউআরএল হল এই রকম:
                • 60dukan.xyz । এর আর্কাইভ সংস্করণ এখানে দেখা যাবে। ফ্লিপকার্টের সঙ্গে এটির সাদৃশ্য খুব বেশি।
                • offernoffer.xyz। আর্কাইভ সংস্করণ
এখানে
 দেখা যাবে। ফ্লিপকার্টের 'হোমপেজ'-এর সঙ্গে এর মিল আছে।
                • Flipkartcomshopbuy.com। আর্কাইভ সংস্করণ এখানে  দেখা যাবে। এটি বেশ মোটা দাগের অনুকরণ।
                • best-autoinsurancez.com। আর্কাইভ সংস্করণ এখানে দেখা যাবে। ওপরেরটির মতই এটিও।
                • big-saving-days.xyz। আর্কাইভ সংস্করণ
এখানে
 দেখা যাবে।
ফ্লিপকার্টের আসল ইউআরএল হল Flipkart.com।

বিশদে আপনার তথ্য পূরণ

যে জিনিসটি কিনতে চাওয়া হচ্ছে, সেটি নির্ধারিত হয়ে গেলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ওয়েবসাইটে সেটি আবার দেখানো হয়। আর সেই সঙ্গে ক্রেতাকে কিছু তথ্য দিতে হয়, যেমন নাম, ঠিকানা, টেলিফোন নম্বর, পিন কোড, রাজ্য ইত্যাদি।
কিন্তু, 60dukan.xyz ছাড়া অন্য ওয়েবসাইটগুলি এ ব্যাপারে কোনও নিয়ম মানে না। কোথায় কি লিখতে হবে, সে বিষয়ে কোনও কড়াকড়ি নেই। যেমন মোবাইল ফোনের নম্বর ও পিন কোড লেখার জায়গায় অক্ষর বসিয়ে দেওয়া যায়। এমনকি ক্রেতারা কোনও কিছু না লিখেও পরের পাতায় চলে যেতে পারেন।

ফ্লিপকার্টের ওয়েবসাইটে এমনটি চলে না। যেমন, মোবাইলের নম্বর লেখার জায়গায়, সংখ্যার বদলে অক্ষর লেখা যায় না।
একটি একক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, আমরা Flipkartcomshopbuy কে টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়াটা বুঝে নিই। এটি এবং best-autoinsurancez হল এমন দুটি ওয়েবসাইট যেগুলি একই চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা নেয় এবং একই অ্যাকাউন্টে তা জমা পড়ে।
এই দুই ওয়েবসাইট ফোনপে-র ইউপিআই-যুক্ত মাধ্যম বা ইউপিআই-এর মারফত টাকা নেয়। এগুলি, আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সহ, যে কোনও ইউপিইউ অ্যাপের সাহায্যে আপনার স্মার্ট ফোনে খুলে যায়।
ইউপিআই হ্যান্ডেল 'flipkartmall36@paytm' থেকে জানা যায় যে, পেটিএম পেমেন্টস ব্যাঙ্ক-এ প্রাপকের অ্যাকাউন্ট আছে।

এই ওয়েবসাইটে টাকা দেওয়ার পথটি ধরে তদন্ত করে বুম দেখে যে, সংযুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরটি হল ০১৮৮১৫০৩৭৮০৭। এবং সেটি ছিল কোনও এক 'তুলারাম আদিবাসি'র নামে।

তবে এই সব ওয়েবসাইটগুলির যে একই অ্যাকাউন্ট ছিল, তেমনটা নয়। 60dukan.xyz বেশ সাবধানী। তারা কেবল 'রেজারপে'-র মাধ্যমে টাকা নেয়। টাকা দেওয়ার সময় আসল প্রাপক কে, তা জানার উপায় নেই। কারণ, ইউপিআই বা ক্রেডিট কার্ড, যার মাধ্যমেই টাকা দিন না কেন, তা রেজারপে-র অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে।
ফ্লিপকার্ট ও ফেসবুকের বক্তব্য
ওই পেজগুলির অস্তিত্ব ও সেগুলি কীভাবে কাজ করে, সে ব্যাপারে ফ্লিপকার্ট ওয়াকিবহাল। বুম এ সম্পর্কে ফ্লিপকার্টের বক্তব্য চাইলে, কম্পানির এক মুখপাত্র জানান: "যেসব ভুয়ো ও অনুকরণ-করা ওয়েবসাইট, ফিসিং সাইট, জাল ওয়েবসাইট, বিজ্ঞাপন, অ্যাপ, ও সোশাল মিডিয়া পেজ আমাদের ব্র্যান্ডকে নকল করে ফ্লিপকার্টের নাম খারাপ করার চেষ্টা করছে এবং আমাদের ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে, একটি সক্রিয় পদ্ধতির সাহায্যে আমরা লাগাতার তাদের ওপর নজরদারি করি। তাদের চিহ্নিত করি এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তাছাড়া প্রতারণার কোনও খবর পেলে আমরা তা তদন্ত করি। সমস্ত খোঁজ খবর নিয়ে, এই ধরনের কেসগুলি আমরা আইন রক্ষকদের হাতে তুলে দিই।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে, এই ধরনের প্রতারকদের যাতে ক্রেতারা চিনতে পারেন, তার জন্য তাঁদের সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে থাকে ফ্লিপকার্ট। ফ্লিপকার্টকে কেন্দ্র করে অনলাইনে প্রতারণার একগুচ্ছ ঘটনার কথা বুমের সঙ্গে শেয়ার করেন মুখপাত্রটি। তার মধ্যে ছিল বুমের তদন্তে বেরিয়ে আসা কয়েকটি ওয়েবসাইটের কথাও।
বুম ফেসবুকের মুখপাত্রর সঙ্গেও যোগাযোগ করে। উনি বলেন, "যে কোনও ধরনের প্রতারণাই ফেসবুকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এবং আমরা আমাদের 'কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডস' ও নীতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়ে থাকি।"
ফেসবুকে এই জাল বিজ্ঞাপনগুলি আইন রক্ষকদের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার সাইবার সেলের অধিকারিক স্নেহাশিস চৌধুরি এই ধরনের বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে নীচের শিক্ষামূলক ভিডিওটি ৩০ জুন পোস্ট করেন।
Full View

Related Stories